নীলফামারীর ডিমলায় এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে মা ও মেয়ে।
তারা দুজনেই উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আর মা মারুফা আকতার একই কলেজের বিএম শাখা থেকে।
শনিবার (৬ নভেম্বর)সকালে মেয়ে শাহী সিদ্দিকা এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ডিমলা সরকারী মহিলা মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে অপরদিকে মা মারুফা আক্তার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ডিমলা বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট কেন্দ্র থেকে। ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় একসাথে অংশ নিয়ে মেয়ের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মা মারুফা আকতার পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৬০ এবং শাহী সিদ্দিকা জিপিএ ৩ দশমিক ০০।
জানা যায়, ২০০৩ সালে দশম শ্রেনীতেই লেখাপড়া শেখার অদম্য ইচ্ছেটা বুকের মধ্যে রেখে মারুফা আকতারকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল। বিয়ের পর বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। চার ছেলেমেয়েকে মানুষ করতেই ১৫টি বছর চলে গেছে। মারুফা আক্তারের বিয়ে হয় উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের পুর্ন্যাঝার গ্রামের স্বামী সাইদুল ইসলামের সাথে। তার বাবার বাড়ি উপজেলার নাউতারা গ্রামে। স্বামী পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বড়। দ্বিতীয় ছেলে দশম শ্রেনী,তৃতীয় মেয়ে অষ্টম শ্রেনী ও ছোট মেয়ে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়াশোনা করে। পড়াশোনা শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে মারুফা আক্তার জানান, পড়াশোনার প্রতি তাঁর খুব আগ্রহ ছিল কিন্তু পরীক্ষার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। তখন তিনি দশম শ্রেনীর ছাত্রী। বিয়ের পর চার ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবার সময়ই হয়নি।
পরে নিজের অদম্য ইচ্ছা ও স্বামী ও সন্তানদের অনুপ্রেরণায় নবম শ্রেনীতে ভর্তি হন ছোটখাতা ফাজিল মাদ্রাসায় তখন মেয়েও নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। এরপর ২০২০ সালে মেয়ের সাথে এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সাফল্যের সহিত উত্তীর্ণ হন।