সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গভীর রাতে চলন্ত বাসে ডাকাতির পর গণধর্ষণ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:১৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২
  • ৩৭ Time View

নিউজ ডেস্কঃ

 

 

কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জগামী একটি চলন্ত বাসের সকল যাত্রীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। সেইসঙ্গে ওই বাসের এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণও করেছে তারা।

মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার ভোরে ডাকাতদলের সদস্যরা টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় বাসটি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী বুধবার বিকালে মধুপুর থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা করেন।

পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়।পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে ৩ জন যাত্রী ওঠেন। কিছুদূর যাওয়ার পর আরও ৪ জন যাত্রী ওঠেন। নির্ধারিত বাস স্টপিস ছাড়া কিছুদূর যাওয়ার পর আরও ৩ জন যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর একপর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা হঠাৎ করে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন।

কিছু দূর যাওয়ার পরে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসেন। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করেন।

এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেন। পরে ডাকাত দলের সদস্যেরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে গণধর্ষণ করেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যান ডাকাতদলের সদস্যরা। তখন চলন্ত বাসটি কাত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

বাসযাত্রীরা বলেন, টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় এসে বাসটির গতি থামিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই চোখ-মুখ ও হাত বাঁধা যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর ঢিবিতে কাত হয়ে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, বাসে যাত্রী সেজে ডাকাতদলের সদস্যরা ওঠেন। পরে তারা টাঙ্গাইলের সীমান্তে এসে এক নারীকে ধর্ষণ ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে পুলিশের ডিবিসহ একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী টাঙ্গাইলে একটি হাসপাতালে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। ওই নারীর বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ২৬ বছর হবে। আশা করছি অতিদ্রুতই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

গাইবান্ধায় নবাগত ও বিদায়ী পুলিশ সুপারের সংবর্ধনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান

গভীর রাতে চলন্ত বাসে ডাকাতির পর গণধর্ষণ

Update Time : ১০:১৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

 

 

কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জগামী একটি চলন্ত বাসের সকল যাত্রীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। সেইসঙ্গে ওই বাসের এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণও করেছে তারা।

মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার ভোরে ডাকাতদলের সদস্যরা টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় বাসটি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী বুধবার বিকালে মধুপুর থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা করেন।

পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়।পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে ৩ জন যাত্রী ওঠেন। কিছুদূর যাওয়ার পর আরও ৪ জন যাত্রী ওঠেন। নির্ধারিত বাস স্টপিস ছাড়া কিছুদূর যাওয়ার পর আরও ৩ জন যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর একপর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা হঠাৎ করে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন।

কিছু দূর যাওয়ার পরে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসেন। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করেন।

এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেন। পরে ডাকাত দলের সদস্যেরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে গণধর্ষণ করেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যান ডাকাতদলের সদস্যরা। তখন চলন্ত বাসটি কাত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

বাসযাত্রীরা বলেন, টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় এসে বাসটির গতি থামিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই চোখ-মুখ ও হাত বাঁধা যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর ঢিবিতে কাত হয়ে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, বাসে যাত্রী সেজে ডাকাতদলের সদস্যরা ওঠেন। পরে তারা টাঙ্গাইলের সীমান্তে এসে এক নারীকে ধর্ষণ ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে পুলিশের ডিবিসহ একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী টাঙ্গাইলে একটি হাসপাতালে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। ওই নারীর বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ২৬ বছর হবে। আশা করছি অতিদ্রুতই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।