সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘোড়াঘাটে এক অসহায় নারীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে মাদক সম্রাট আটক

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ জুলাই ২০২২
  • ৩৩ Time View

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ

 

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ কারী হালিম নামের এক মাদক সম্রাটকে- আটক করেছে পুলিশ।

মাদক সম্রাট হালিম অনেকটা চতুর হওয়ায় এতদিন পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাহিরে ছিল। অবশেষে নিজের পাতানো ফাঁদে এক অসহায় নারীকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই পুলিশের জালে আটকা পড়েছে।

ঘোড়াঘাট থানার মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভেলাইন গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) এর সাথে গত ৮ বছর আগে পাশ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার হোসনে আরা (২৮) নামে এক নারীর বিয়ে হয় এবং ৩ বছর সংসার করার পর জাহাঙ্গীর তার স্ত্রীকে একক ভাবে তাকে তালাক দেয়।তালাক দেওয়াকে কেন্দ্র করে হোসনে আরা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেয় ও মামলা করার প্রস্তুতি নেয়। সেই মামলা থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীর এবং তার মাদক ব্যবসায়ী বন্ধু হালিম, করিম এবং করিমের স্ত্রী সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার জন্য মুঠোফোনে কল করে গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে হোসনে আরাকে ঘোড়াঘাটে নিয়ে আসে।

এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার সন্ধায় উভয় পক্ষ মাদক ব্যবসায়ী করিমের বাড়িতে আলোচনায় বসে। এ সুযোগে ফাঁকে মাদক ব্যবসায়ী হালিম গ্রুপের সদস্যরা কৌশলে হোসনে আরার ভ্যানিটি ব্যাগে ৪০ পিস ইয়াবা রাখে এবং হালিম থানায় ফোন করে পুলিশকে জানায় করিমের বাড়িতে ইয়াবা ব্যবসায়ী অবস্থান করছে।

তথ্য অনুযায়ী গত শুক্রবার সন্ধায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হোসনে আরাকে ইয়াবা সহ আটক করে। এ সময় হোসনে আরা নির্দোষ বলে পুলিশের কাছে কান্নাকাটি করে ও পুরো ঘটনার বিবরণ দেয়। ঘটনা শুনে পুলিশ অধিক তদন্ত শুরু করলে হোসনে আরাকে ফাঁসানোর বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরকে প্রধান আসামী করে হালিম, করিম ও করিমের স্ত্রী ছালমা বেগমের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মামলা করে। তারা সকলে মাদক সম্রাট হালিমের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছে বলে জানা যায়। অবশেষে গত শনিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতা নিয়ে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ মাদক সম্রাট হালিমকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, মাদক সম্রাট হালিম এবং তার সহযোগীরা খুব কৌশলে ওই নারীকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেছিল। তবে তদন্ত কৌশলে সত্য ঘটনা উঠে এসেছে। গ্রেপ্তারকৃত হালিমকে রবিবার দুপুরে দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে ও অপর পলাতক আসামীদেরকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

গাইবান্ধায় নবাগত ও বিদায়ী পুলিশ সুপারের সংবর্ধনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান

ঘোড়াঘাটে এক অসহায় নারীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে মাদক সম্রাট আটক

Update Time : ১১:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ জুলাই ২০২২

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ

 

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ কারী হালিম নামের এক মাদক সম্রাটকে- আটক করেছে পুলিশ।

মাদক সম্রাট হালিম অনেকটা চতুর হওয়ায় এতদিন পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাহিরে ছিল। অবশেষে নিজের পাতানো ফাঁদে এক অসহায় নারীকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই পুলিশের জালে আটকা পড়েছে।

ঘোড়াঘাট থানার মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভেলাইন গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) এর সাথে গত ৮ বছর আগে পাশ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার হোসনে আরা (২৮) নামে এক নারীর বিয়ে হয় এবং ৩ বছর সংসার করার পর জাহাঙ্গীর তার স্ত্রীকে একক ভাবে তাকে তালাক দেয়।তালাক দেওয়াকে কেন্দ্র করে হোসনে আরা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেয় ও মামলা করার প্রস্তুতি নেয়। সেই মামলা থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীর এবং তার মাদক ব্যবসায়ী বন্ধু হালিম, করিম এবং করিমের স্ত্রী সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার জন্য মুঠোফোনে কল করে গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে হোসনে আরাকে ঘোড়াঘাটে নিয়ে আসে।

এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার সন্ধায় উভয় পক্ষ মাদক ব্যবসায়ী করিমের বাড়িতে আলোচনায় বসে। এ সুযোগে ফাঁকে মাদক ব্যবসায়ী হালিম গ্রুপের সদস্যরা কৌশলে হোসনে আরার ভ্যানিটি ব্যাগে ৪০ পিস ইয়াবা রাখে এবং হালিম থানায় ফোন করে পুলিশকে জানায় করিমের বাড়িতে ইয়াবা ব্যবসায়ী অবস্থান করছে।

তথ্য অনুযায়ী গত শুক্রবার সন্ধায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হোসনে আরাকে ইয়াবা সহ আটক করে। এ সময় হোসনে আরা নির্দোষ বলে পুলিশের কাছে কান্নাকাটি করে ও পুরো ঘটনার বিবরণ দেয়। ঘটনা শুনে পুলিশ অধিক তদন্ত শুরু করলে হোসনে আরাকে ফাঁসানোর বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরকে প্রধান আসামী করে হালিম, করিম ও করিমের স্ত্রী ছালমা বেগমের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মামলা করে। তারা সকলে মাদক সম্রাট হালিমের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছে বলে জানা যায়। অবশেষে গত শনিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতা নিয়ে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ মাদক সম্রাট হালিমকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, মাদক সম্রাট হালিম এবং তার সহযোগীরা খুব কৌশলে ওই নারীকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেছিল। তবে তদন্ত কৌশলে সত্য ঘটনা উঠে এসেছে। গ্রেপ্তারকৃত হালিমকে রবিবার দুপুরে দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে ও অপর পলাতক আসামীদেরকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।