জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণসহ তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন আজ (শুক্রবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানব বন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে।
মানব বন্ধন থেকে প্রধানত তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানতের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা। স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য আগাম ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের বিধান বাতিল করা। অবিলম্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন-এর নিবন্ধন প্রদান নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা ভেবেছিলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি গণমানুষের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু এত ত্যাগের পরেও সাধারণ মানুষের কোনো সংস্কার বা পরিবর্তন হয়নি।
কৃষকরা ফসল উৎপাদন করলেও তার ন্যায্যমূল্য পান না। এর আগেও আমরা বিভিন্ন দাবি করেছি কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ছিলাম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে লুটপাট, চাঁদাবাজি এবং জমি দখলের মতো ঘটনা বাড়ছে। জাতীয় তফছিল ঘোষণা হতে না হতে দেশে গোলাগুলি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে যা খুবই দুখজনক, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় জড়িত এবং নির্দেশদাতাদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানাই যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার না করতে পারেলে অন্তর্বর্তী সরকার জনতার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রমাণিত হবে।
বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল আলম রাসু বলেন, বর্তমান ৫০ হাজার টাকা জামানত দরিদ্র ও ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। এটি কেবল বিত্তশালীদের জন্যই নির্বাচনের পথ সুগম করে। বাংলাদেশে এখনও ৬৩ শতাংশ পরিবার ভূমিহীন। বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য জামানতের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এই পরিমাণ কমানোর দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) এটি কার্যকর করেনি বরং স্বৈরাচার কাঠামো বহাল রেখেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের কমপক্ষে ১ শতাংশের সমর্থন তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়ার বিধান এখনও বিদ্যমান রয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন এই বিধান বাতিলের দাবি জানালেও তা বহাল আছে। এটি একটি কালো আইন দ্রুত সংস্কার করতে হবে।
“বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন” এখনও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পায়নি। হাইকোর্টের সুস্পষ্ট রায় থাকা সত্ত্বেও ইসি নিবন্ধন নিয়ে গড়িমসি বা কালক্ষেপণ করছে। দলটি বাংলাদেশে রাষ্ট্র সংস্কার এর আওয়াজ প্রথম তোলে তারপরেও তাদের নিবন্ধন আটকিয়ে রেখেছে , যা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন। উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল আলম রাসু। উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন। আরো বক্তব্য রাখেন মোছা: মিলি বেগম, মোহাম্মদ মিন্টু মিয়া, সভাপতি ,বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন।
মোঃ সোহেল শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ,বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, মোহাম্মদ লিটন কবিরাজ, সভাপতি ঢাকা জেলা, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন। এছাড়া আরো বক্তব্য দেন শ্মশান ঠাকুর, মানু ঠাকুর, মোঃ বিল্লাল হোসেন, অহিংস গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, মোছা:আসমা আক্তার, অহিংস গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি। মো:আকাশ মিয়া, অহিংস গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক। সাফি আলম, অহিংস গণঅভ্যুত্থান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক , বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিডিয়ার সম্পাদক এহসান আহমেদ,বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদকমোঃ জুয়েল আহমেদ,বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এর ঢাকা দক্ষিণ সদস্য সচিব মোঃ কাওসার মিয়া প্রমুখ।
তারা সরকারের প্রতি নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নিবন্ধন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। উক্ত মানব বন্ধনে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্টাফ রিপোর্টর: 


















