সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী আত্মীয়তার সংস্কৃতি মুড়ির টিন

কামারপাড়ার ষ্টেশন ঘেঁষে গ্রামের মেঠোপথ ধরে হাতে মুরির টিন, পান-সুপারি, আর এক হাঁড়ি মিষ্টি নিয়ে হায়দার আলী যাচ্ছেন নাতনির বাড়ি।

একসময় এ চিত্র ছিল গ্রামবাংলার খুবই পরিচিত দৃশ্য। দাদা-নানারা যখন নাতি-নাতনির বাড়ি যেতেন, তখন তাদের হাতে এসব উপহার থাকতই। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে।

আগে আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই উপহার নিয়ে যাওয়া। দূর-দূরান্ত থেকে দাদা-নানারা নাতি-নাতনির জন্য নিয়ে যেতেন মিষ্টি, পানের খিলি, গুড়-মুড়ি কিংবা বিভিন্ন হস্তশিল্পের সামগ্রী।

এতে আত্মীয়তার বন্ধন যেমন দৃঢ় হতো, তেমনি শিশুরাও তাদের শিকড়ের সাথে সংযুক্ত থাকত।

কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সংস্কৃতি আজ বিলুপ্তির পথে। এখন আত্মীয়তার সম্পর্ক অনেকটাই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে ফোন কল, মেসেজ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘রিয়্যাকশন’-এ। আগের মতো আর কেউ ব্যাগভর্তি মিষ্টি নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ছুটে যান না, বরং দেখা-সাক্ষাৎও কমে গেছে।

সংস্কৃতি ব্যাক্তি রুবেল পন্ডিত মনে করেন, গ্রামবাংলার এই আন্তরিকতা ধরে রাখা খুব জরুরি। প্রযুক্তির অগ্রগতির পাশাপাশি আমাদের শেকড়ের এই সংস্কৃতিকেও বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

নইলে একদিন হয়তো গল্পের বইয়েই পড়তে হবে— একসময় দাদা-নানারা নাতি-নাতনির জন্য মুড়ির টিন আর মিষ্টি হাতে নিয়ে যেতেন!

আপনার এলাকায় কি এখনো এই সংস্কৃতি টিকে আছে? নাকি সেটিও হারিয়ে যাচ্ছে? মন্তব্য করে জানাতে পারেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

গাইবান্ধায় হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী আত্মীয়তার সংস্কৃতি মুড়ির টিন

Update Time : ১২:০০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

কামারপাড়ার ষ্টেশন ঘেঁষে গ্রামের মেঠোপথ ধরে হাতে মুরির টিন, পান-সুপারি, আর এক হাঁড়ি মিষ্টি নিয়ে হায়দার আলী যাচ্ছেন নাতনির বাড়ি।

একসময় এ চিত্র ছিল গ্রামবাংলার খুবই পরিচিত দৃশ্য। দাদা-নানারা যখন নাতি-নাতনির বাড়ি যেতেন, তখন তাদের হাতে এসব উপহার থাকতই। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে।

আগে আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই উপহার নিয়ে যাওয়া। দূর-দূরান্ত থেকে দাদা-নানারা নাতি-নাতনির জন্য নিয়ে যেতেন মিষ্টি, পানের খিলি, গুড়-মুড়ি কিংবা বিভিন্ন হস্তশিল্পের সামগ্রী।

এতে আত্মীয়তার বন্ধন যেমন দৃঢ় হতো, তেমনি শিশুরাও তাদের শিকড়ের সাথে সংযুক্ত থাকত।

কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সংস্কৃতি আজ বিলুপ্তির পথে। এখন আত্মীয়তার সম্পর্ক অনেকটাই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে ফোন কল, মেসেজ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘রিয়্যাকশন’-এ। আগের মতো আর কেউ ব্যাগভর্তি মিষ্টি নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ছুটে যান না, বরং দেখা-সাক্ষাৎও কমে গেছে।

সংস্কৃতি ব্যাক্তি রুবেল পন্ডিত মনে করেন, গ্রামবাংলার এই আন্তরিকতা ধরে রাখা খুব জরুরি। প্রযুক্তির অগ্রগতির পাশাপাশি আমাদের শেকড়ের এই সংস্কৃতিকেও বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

নইলে একদিন হয়তো গল্পের বইয়েই পড়তে হবে— একসময় দাদা-নানারা নাতি-নাতনির জন্য মুড়ির টিন আর মিষ্টি হাতে নিয়ে যেতেন!

আপনার এলাকায় কি এখনো এই সংস্কৃতি টিকে আছে? নাকি সেটিও হারিয়ে যাচ্ছে? মন্তব্য করে জানাতে পারেন।