সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পলাশবাড়ীতে শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপনের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে

সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। এই আনন্দ উৎসবকে ঘিরে চারদিকে চলছে নানা আয়োজন।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা। প্রতিমা তৈরিতে এঁটেল ও বেলে মাটি ছাড়াও বাঁশ-খড়, দড়ি, লোহা, পাট, কাঠ, রং, বিভিন্ন রঙের ছিট কাপড় ও শাড়ি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের হৃদয় ছুঁতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করছেন বিভিন্ন মন্দিরের পূজার আয়োজকরা।

পলাশবাড়ী পৌর শহরের কালিবাড়ি , হোসেনপুর করতোয়া পাড়ায় দুলাল ঠাকুর মন্দির ,বরিশাল মন্দির,আমলাগাছি মন্দির ও জগরজানি মন্দির দূর্গাপুর মন্দিরে দেখা গেছে সেখানে প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। রঙ আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবীর প্রতিচ্ছবি।

দূর্গা প্রতিমার পাশাপাশি গণেশ, কার্তিক, লক্ষী স্বরস্বতীর প্রতিমাকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে হয়। মহিষাসুর, সিংহসহ সবার বাহনও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই সেগুলোকেও দিতে হয় সমান গুরুত্ব। আর এসব মিলিয়েই পরিপূর্ণ হয় একটি দূর্গার প্রতিমা।

মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে দূর্গাপূজা। ঢাঁকঢোল আর কাঁসর বাদ্যে দেবীর বোধন পূজার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ বছর দেবী দূর্গা কৈলাস থেকে দোলায় চেপে মর্তে‌ ধামে আসছে। ৫ দিন নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে মর্তে‌ থেকে কৈলাসে দেবী ফিরবেন ঘটকে।

এদিকে প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন প্রতিবছরই তারা দূর্গার প্রতিমা বানিয়ে থাকেন। এবারও তারা দিনরাত পরিশ্রম করে পরিবারের সকলকে নিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ করে যাচ্ছেন। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে কিছু মন্ডপগুলোতে ছোট করে প্রতিমা বানাচ্ছেন মন্দির কমিটি । এতে তাদের এই পরিশ্রমে তেমন কোন লাভবান হতে পারছেন না প্রতিমা শিল্পীরা। তারপরও বংশের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে তাদের এই পরিশ্রম। ইতিমধ্যেই প্রতিমা বানানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলছে রংয়ের কাজ দৃষ্টি নন্দনরূপে সাজানো হচ্ছে প্রতিমাগুলো।

এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবু দিলিপ চন্দ্র সাহা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। এই উপলক্ষে তারা ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পলাশবাড়ীতে প্রতিবছর যেভাবে দূর্গাপূজা উদযাপন করা হয়। ঠিক একই ভাবে এবারও পূজা উদযাপন করা হবে।
এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষায়।

এদিকে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে পলাশবাড়ী থানা ওসি তদন্ত লাইছুর রহমান সকল হিন্দুধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দূর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এবছর পলাশবাড়ীতে ৫৭টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব পালিত হবে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা, আনসার নিয়োগ করা,পুলিশের টহল টিমও মাঠে থাকবে। সেই সাথে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। অন্যান্য বাহিনীরাও মনিটরিং করবে। তিনি আশা করেন পলাশবাড়ীর সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ জনসাধারণের সহযোগিতায় আমরা সকলে মিলে সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে এই উৎসবটি পালিত হবে।

আসছে ১৩ই অক্টোবর রবিবার বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলা শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পলাশবাড়ীর শহরের করতোয়া নদীতে দূর্গার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে এই উৎসবটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

পলাশবাড়ীতে শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপনের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে

Update Time : ০৫:১৫:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। এই আনন্দ উৎসবকে ঘিরে চারদিকে চলছে নানা আয়োজন।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা। প্রতিমা তৈরিতে এঁটেল ও বেলে মাটি ছাড়াও বাঁশ-খড়, দড়ি, লোহা, পাট, কাঠ, রং, বিভিন্ন রঙের ছিট কাপড় ও শাড়ি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের হৃদয় ছুঁতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করছেন বিভিন্ন মন্দিরের পূজার আয়োজকরা।

পলাশবাড়ী পৌর শহরের কালিবাড়ি , হোসেনপুর করতোয়া পাড়ায় দুলাল ঠাকুর মন্দির ,বরিশাল মন্দির,আমলাগাছি মন্দির ও জগরজানি মন্দির দূর্গাপুর মন্দিরে দেখা গেছে সেখানে প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। রঙ আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবীর প্রতিচ্ছবি।

দূর্গা প্রতিমার পাশাপাশি গণেশ, কার্তিক, লক্ষী স্বরস্বতীর প্রতিমাকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে হয়। মহিষাসুর, সিংহসহ সবার বাহনও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই সেগুলোকেও দিতে হয় সমান গুরুত্ব। আর এসব মিলিয়েই পরিপূর্ণ হয় একটি দূর্গার প্রতিমা।

মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে দূর্গাপূজা। ঢাঁকঢোল আর কাঁসর বাদ্যে দেবীর বোধন পূজার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ বছর দেবী দূর্গা কৈলাস থেকে দোলায় চেপে মর্তে‌ ধামে আসছে। ৫ দিন নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে মর্তে‌ থেকে কৈলাসে দেবী ফিরবেন ঘটকে।

এদিকে প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন প্রতিবছরই তারা দূর্গার প্রতিমা বানিয়ে থাকেন। এবারও তারা দিনরাত পরিশ্রম করে পরিবারের সকলকে নিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ করে যাচ্ছেন। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে কিছু মন্ডপগুলোতে ছোট করে প্রতিমা বানাচ্ছেন মন্দির কমিটি । এতে তাদের এই পরিশ্রমে তেমন কোন লাভবান হতে পারছেন না প্রতিমা শিল্পীরা। তারপরও বংশের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে তাদের এই পরিশ্রম। ইতিমধ্যেই প্রতিমা বানানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলছে রংয়ের কাজ দৃষ্টি নন্দনরূপে সাজানো হচ্ছে প্রতিমাগুলো।

এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবু দিলিপ চন্দ্র সাহা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। এই উপলক্ষে তারা ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পলাশবাড়ীতে প্রতিবছর যেভাবে দূর্গাপূজা উদযাপন করা হয়। ঠিক একই ভাবে এবারও পূজা উদযাপন করা হবে।
এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষায়।

এদিকে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে পলাশবাড়ী থানা ওসি তদন্ত লাইছুর রহমান সকল হিন্দুধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দূর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এবছর পলাশবাড়ীতে ৫৭টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব পালিত হবে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা, আনসার নিয়োগ করা,পুলিশের টহল টিমও মাঠে থাকবে। সেই সাথে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। অন্যান্য বাহিনীরাও মনিটরিং করবে। তিনি আশা করেন পলাশবাড়ীর সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ জনসাধারণের সহযোগিতায় আমরা সকলে মিলে সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে এই উৎসবটি পালিত হবে।

আসছে ১৩ই অক্টোবর রবিবার বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলা শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পলাশবাড়ীর শহরের করতোয়া নদীতে দূর্গার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে এই উৎসবটি।