সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেতন বন্ধ ১০ মাস, সংবাদ সম্মেলনে স্কুলের আয়া

গাইবান্ধার সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত আয়া মোছাঃ জুলেখা খাতুন ১০ মাস বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তার জন্ম তারিখ ৩১/০৭/১৯৭৪ । কিন্তু ভোটার আইডি কার্ডে ভুলবশতঃ জন্ম তারিখ হয়েছে ০১/০৮/১৯৬২ইং।

তার দাবি, কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই বয়সের অসংগতি রেখে ছবি তুলে তার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রস্তুত করা হয়। যাহা তার সার্টিফিকেটের সাথে জন্ম তারিখের কোন মিল নাই। আর এই ভুল জন্ম তারিখ কে পুজি করে তাকে চাকরী হতে অব্যহতি দেওয়ার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পায়তারা করে আসছে।

মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) দুপুরে প্রেসক্লাব গাইবান্ধায় ভুক্তভোগী জুলেখা বেগম তার পরিবারের লোকজন সঙ্গে নিয়ে এমন অভিযোগ ও বেতন-ভাতা চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জুলেখা খাতুন বলেন , অষ্টম শ্রেনির সনদ দিয়ে আমি ১৯৯৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারীতে রামচন্দ্রপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঝাড়ুদার কাম আয়া পদে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকে অত্যান্ত সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। পরবর্তীত্বে ২০০২ সালে এমপিও ভুক্ত হই। সেই থেকে বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছি আমি। এরমধ্যে ২০০৭ সালে জাতীয় পরিচয় পত্র (ভোটার তালিকা হালনাগাদে) তথ্য সংগ্রহকারি আমার আনুমানিক একটি জন্ম তারিখ লিখে দেন। পরবর্তীত্বে জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে পেয়ে বয়সের অসংগতি দেখতে পাই এবং আমার স্কুল সাার্টফিকেটের সাথে জন্ম তারিখের অমিল পরিলক্ষিত হয়। পরে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আমি নির্বাচন অফিসে আবেদন করি। জাতীয় পরিচয় পত্রের এমন জটিলতাকে পুজি করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদানের পায়তারা শুরু করে।

এদিকে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের কথা বলে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে প্রথমে ২০ হাজার ও পরে অডিটের নামে করে ৫০ হাজার টাকা নেন। এরপর প্রধান শিক্ষক আমাকে কৌশলে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর জাতীয় পরিচয় পত্র কেন সংশোধন করা হয়নি এই মর্মে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জুলেখা খাতুন বলেন, জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধন না করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয়। র্দীঘ ১০ মাস থেকে বেতন বন্ধ থাকায় আমি আমার পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

অন্যদিকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শের আলম ও বিদ্যালয়ের সভাপতি রেজাউল করিম তাজু আমার ওই পদে অন্য কাউকে নিয়োগের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে চাকরি থেকে রিজাইন দিতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি নানা ভাবে আমাকে ভয়ভীতিসহ হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে আমাকে বের করে দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করে দেন।

জুলেখা খাতুনের আয়ের একমাত্র অবলম্বন চাকরি। চাকরির ফিরে পাওয়া, বেতন-ভাতা উত্তোলনের ব্যবস্থাসহ প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের সভাপতির এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

বেতন বন্ধ ১০ মাস, সংবাদ সম্মেলনে স্কুলের আয়া

Update Time : ১২:৫৪:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩

গাইবান্ধার সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত আয়া মোছাঃ জুলেখা খাতুন ১০ মাস বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তার জন্ম তারিখ ৩১/০৭/১৯৭৪ । কিন্তু ভোটার আইডি কার্ডে ভুলবশতঃ জন্ম তারিখ হয়েছে ০১/০৮/১৯৬২ইং।

তার দাবি, কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই বয়সের অসংগতি রেখে ছবি তুলে তার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রস্তুত করা হয়। যাহা তার সার্টিফিকেটের সাথে জন্ম তারিখের কোন মিল নাই। আর এই ভুল জন্ম তারিখ কে পুজি করে তাকে চাকরী হতে অব্যহতি দেওয়ার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পায়তারা করে আসছে।

মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) দুপুরে প্রেসক্লাব গাইবান্ধায় ভুক্তভোগী জুলেখা বেগম তার পরিবারের লোকজন সঙ্গে নিয়ে এমন অভিযোগ ও বেতন-ভাতা চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জুলেখা খাতুন বলেন , অষ্টম শ্রেনির সনদ দিয়ে আমি ১৯৯৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারীতে রামচন্দ্রপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঝাড়ুদার কাম আয়া পদে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকে অত্যান্ত সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। পরবর্তীত্বে ২০০২ সালে এমপিও ভুক্ত হই। সেই থেকে বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছি আমি। এরমধ্যে ২০০৭ সালে জাতীয় পরিচয় পত্র (ভোটার তালিকা হালনাগাদে) তথ্য সংগ্রহকারি আমার আনুমানিক একটি জন্ম তারিখ লিখে দেন। পরবর্তীত্বে জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে পেয়ে বয়সের অসংগতি দেখতে পাই এবং আমার স্কুল সাার্টফিকেটের সাথে জন্ম তারিখের অমিল পরিলক্ষিত হয়। পরে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আমি নির্বাচন অফিসে আবেদন করি। জাতীয় পরিচয় পত্রের এমন জটিলতাকে পুজি করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদানের পায়তারা শুরু করে।

এদিকে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের কথা বলে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে প্রথমে ২০ হাজার ও পরে অডিটের নামে করে ৫০ হাজার টাকা নেন। এরপর প্রধান শিক্ষক আমাকে কৌশলে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর জাতীয় পরিচয় পত্র কেন সংশোধন করা হয়নি এই মর্মে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জুলেখা খাতুন বলেন, জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধন না করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয়। র্দীঘ ১০ মাস থেকে বেতন বন্ধ থাকায় আমি আমার পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

অন্যদিকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শের আলম ও বিদ্যালয়ের সভাপতি রেজাউল করিম তাজু আমার ওই পদে অন্য কাউকে নিয়োগের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে চাকরি থেকে রিজাইন দিতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি নানা ভাবে আমাকে ভয়ভীতিসহ হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে আমাকে বের করে দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করে দেন।

জুলেখা খাতুনের আয়ের একমাত্র অবলম্বন চাকরি। চাকরির ফিরে পাওয়া, বেতন-ভাতা উত্তোলনের ব্যবস্থাসহ প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের সভাপতির এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।