সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশ নিয়োগে ১০০% স্বচ্ছতা, কৃতিত্ব পুলিশ সুপার কামাল হোসেনের

স্বচ্ছতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। ১২০ টাকায় চাকুরি পেলেন ৯১ জন প্রার্থী। তাদের পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্স চত্ত্বরে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। এসময় সেখানে আবেগঘন এক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

মাত্র ১শ ২০টাকায় চাকুরি পাওয়া সৌভাগ্যবান গাইবান্ধা সদরের পূর্বকমরনই গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে আনিকা খাতুন। অঝরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তার বাবা একজন ক্ষুদ্র কাঁচামাল ব্যবসায়ী। কোনদিন ভাবিনি এভাবে ফ্রিতে সরকারি চাকুরী নামক সোনার হরিন মিলবে। পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্ত্ববধান ও স্বচ্ছতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাহাবাজ গ্রামের মারুফ প্রমানিক বলেন, আমার বাবা শুক্কুর আলী পেশায় একজন দিনমজুর। একজন দিনমজুরের ছেলে সরকারি চাকুরি পাবে এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। একথা বলেই তিনি কেঁদে ফেলেন।

সম্মিলিত মেধা তালিকায় উক্তীর্ণ হওয়া পলাশবাড়ী উপজেলার দূর্গাপুুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রাবণ কুমার রায় অনুরূপ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ভালো লেখাপড়া করলে যে চাকরি পাওয়া যায়, তার প্রমাণ পেলাম। আগে ভাবতাম টাকা ছাড়া চাকুরী হয় না। আমার সেই ধারণা ভুল প্রমানিত হল। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।

একইভাবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন, জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার বড় জামালপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে জুঁথি খাতুনসহ অন্যান্যরা।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, ‘চাকুরী নয়, সেবা’ এই শ্লোগানে আমরা স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। কোনো অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ দেওয়া হয়নি কাউকে। কোনো সুপারিশ বা চাপ ছিল না। মেধাবী এবং শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের আমরা চাকরি দিয়েছি। আশা করি, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা পুলিশ বিভাগ ও দেশের সম্মান বৃদ্ধি করবেন।

শেষে পুলিশ সুপার উত্তীর্ণ সকলের হাতে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

মোট ৭শ ৩৫ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ ২শ ২৭জন। সর্বশেষ মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৯১জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১৪ জন নারী।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

পুলিশ নিয়োগে ১০০% স্বচ্ছতা, কৃতিত্ব পুলিশ সুপার কামাল হোসেনের

Update Time : ০৭:৫২:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

স্বচ্ছতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। ১২০ টাকায় চাকুরি পেলেন ৯১ জন প্রার্থী। তাদের পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্স চত্ত্বরে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। এসময় সেখানে আবেগঘন এক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

মাত্র ১শ ২০টাকায় চাকুরি পাওয়া সৌভাগ্যবান গাইবান্ধা সদরের পূর্বকমরনই গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে আনিকা খাতুন। অঝরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তার বাবা একজন ক্ষুদ্র কাঁচামাল ব্যবসায়ী। কোনদিন ভাবিনি এভাবে ফ্রিতে সরকারি চাকুরী নামক সোনার হরিন মিলবে। পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্ত্ববধান ও স্বচ্ছতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাহাবাজ গ্রামের মারুফ প্রমানিক বলেন, আমার বাবা শুক্কুর আলী পেশায় একজন দিনমজুর। একজন দিনমজুরের ছেলে সরকারি চাকুরি পাবে এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। একথা বলেই তিনি কেঁদে ফেলেন।

সম্মিলিত মেধা তালিকায় উক্তীর্ণ হওয়া পলাশবাড়ী উপজেলার দূর্গাপুুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রাবণ কুমার রায় অনুরূপ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ভালো লেখাপড়া করলে যে চাকরি পাওয়া যায়, তার প্রমাণ পেলাম। আগে ভাবতাম টাকা ছাড়া চাকুরী হয় না। আমার সেই ধারণা ভুল প্রমানিত হল। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।

একইভাবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন, জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার বড় জামালপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে জুঁথি খাতুনসহ অন্যান্যরা।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, ‘চাকুরী নয়, সেবা’ এই শ্লোগানে আমরা স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। কোনো অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ দেওয়া হয়নি কাউকে। কোনো সুপারিশ বা চাপ ছিল না। মেধাবী এবং শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের আমরা চাকরি দিয়েছি। আশা করি, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা পুলিশ বিভাগ ও দেশের সম্মান বৃদ্ধি করবেন।

শেষে পুলিশ সুপার উত্তীর্ণ সকলের হাতে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

মোট ৭শ ৩৫ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ ২শ ২৭জন। সর্বশেষ মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৯১জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১৪ জন নারী।