সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধার মাদক ট্রাজেডির রায়: মাদক ব্যবসায়ী রবিন্দ্রনাথের মৃত্যুদন্ডাদেশ

গত ১৯৯৮ সালে পহেলা বৈশাখে গাইবান্ধায় মাদক ট্রাজেডি ও বিষাক্ত মদ্যপানে ১১ জন ছাড়াও শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু ও অনেকেই অন্ধত্ব বরন করার ঘটনা প্রমানিত হওয়ায় মাদক বিক্রেতা রবিন্দ্র নাথ সরকার ওরফে রবি’র মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছে জেলা দায়রা জজ আদালত।এ ঘটনায় মামলা দায়ের দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিক্তিতে আসামীর অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।

১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আবুল মনসুর মিয়া আসামীর অনুউপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি(পিপি) এ্যাডভোকোট ফারুক আহম্মেদ প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন,গত ১৯৯৮ সালের পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের রাতে মদ্যপানে গাইবান্ধায় আমোদ ফুর্তিতে মেতে ওঠেন অনেকেই। তারা সকলেই বরিন্দ্রনাথ সরকারের ষ্টেশন রোডস্থ ন্যাশনাল হোমিও হল থেকে রেকটি ফায়েট স্পীট কিনে নিয়ে সেবন করেন। অতিরিক্ত লাভের আশায় রবিন্দ্র নাথ সরকার দোকানে এবং বাড়িতে মজুত স্পীটে বিষাক্ত মিথানল মিশ্রিত রেকটি ফায়েট স্পীট বিক্রি করেন। এই বিষাক্ত স্পীট খেয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ্যদের গাইবান্ধা জেলারেল হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় কাবলু , ডাবলু, সুমিতারানী ,ললিত রানী ,কান্তি ও মিলন সহ ১১ জনের মৃত্যু হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে হাসপাতালে ও গোপনে আরও অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও বিষাক্ত মদ্যপানে আরও অনেকেই জচিরদিনের মতো পঙ্গত্ব ও অন্ধত্ব বরন করেন।

এ ঘটনায় রবিদাস সম্প্রদায়ের সর্দ্দার মুন্নী বাঁশফোর বাদী হয়ে গত ১৯৯৮ সালের ১৬ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন । মামলার পরপরই মাদক ব্যবসায়ী রবিন্দ্র নাথ বাড়িতে স্ত্রী সন্তান রেখে পালিয়ে যায়। পরে তদন্ত শেষে রবিন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তৎকালীন গাইবান্ধা সিআইডির পরিদর্শক আবেদ আলী। দীর্ঘদিন আদালতে সাক্ষ্য প্রমান শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাদক বিক্রেতা রবিন্দ্র নাথ সরকার ওরফে রবির মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করেন। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী হিসাবে এ মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড.আবু আলা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান রিপু।

উল্লেখ্য,উক্ত মামলায় মুত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামী রবিন্দ্রনাথ সরকার রবি গাইবান্ধা পৌর শহরের স্কুললেন এলাকার বাসিন্দা। এ মামলা দায়ের পর হতে সে পলাতক রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

গাইবান্ধার মাদক ট্রাজেডির রায়: মাদক ব্যবসায়ী রবিন্দ্রনাথের মৃত্যুদন্ডাদেশ

Update Time : ০৮:২১:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২

গত ১৯৯৮ সালে পহেলা বৈশাখে গাইবান্ধায় মাদক ট্রাজেডি ও বিষাক্ত মদ্যপানে ১১ জন ছাড়াও শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু ও অনেকেই অন্ধত্ব বরন করার ঘটনা প্রমানিত হওয়ায় মাদক বিক্রেতা রবিন্দ্র নাথ সরকার ওরফে রবি’র মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছে জেলা দায়রা জজ আদালত।এ ঘটনায় মামলা দায়ের দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিক্তিতে আসামীর অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।

১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আবুল মনসুর মিয়া আসামীর অনুউপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি(পিপি) এ্যাডভোকোট ফারুক আহম্মেদ প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন,গত ১৯৯৮ সালের পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের রাতে মদ্যপানে গাইবান্ধায় আমোদ ফুর্তিতে মেতে ওঠেন অনেকেই। তারা সকলেই বরিন্দ্রনাথ সরকারের ষ্টেশন রোডস্থ ন্যাশনাল হোমিও হল থেকে রেকটি ফায়েট স্পীট কিনে নিয়ে সেবন করেন। অতিরিক্ত লাভের আশায় রবিন্দ্র নাথ সরকার দোকানে এবং বাড়িতে মজুত স্পীটে বিষাক্ত মিথানল মিশ্রিত রেকটি ফায়েট স্পীট বিক্রি করেন। এই বিষাক্ত স্পীট খেয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ্যদের গাইবান্ধা জেলারেল হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় কাবলু , ডাবলু, সুমিতারানী ,ললিত রানী ,কান্তি ও মিলন সহ ১১ জনের মৃত্যু হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে হাসপাতালে ও গোপনে আরও অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও বিষাক্ত মদ্যপানে আরও অনেকেই জচিরদিনের মতো পঙ্গত্ব ও অন্ধত্ব বরন করেন।

এ ঘটনায় রবিদাস সম্প্রদায়ের সর্দ্দার মুন্নী বাঁশফোর বাদী হয়ে গত ১৯৯৮ সালের ১৬ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন । মামলার পরপরই মাদক ব্যবসায়ী রবিন্দ্র নাথ বাড়িতে স্ত্রী সন্তান রেখে পালিয়ে যায়। পরে তদন্ত শেষে রবিন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তৎকালীন গাইবান্ধা সিআইডির পরিদর্শক আবেদ আলী। দীর্ঘদিন আদালতে সাক্ষ্য প্রমান শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাদক বিক্রেতা রবিন্দ্র নাথ সরকার ওরফে রবির মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করেন। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী হিসাবে এ মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড.আবু আলা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান রিপু।

উল্লেখ্য,উক্ত মামলায় মুত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামী রবিন্দ্রনাথ সরকার রবি গাইবান্ধা পৌর শহরের স্কুললেন এলাকার বাসিন্দা। এ মামলা দায়ের পর হতে সে পলাতক রয়েছে।