সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভিক্ষুকের হাত কর্মের করতে জেলা প্রশাসকের মহানুভবতা

গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে পঙ্গু সাহাবুদ্দিন মোল্লা (৩৬)। সড়ক দূর্ঘটনায় পঙ্গু হবার আগে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাতেন।

বিগত আড়াই বছর আগে করোনা চলাকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বেদগ্রাম এলাকায় একটি দ্রুত গতির ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে তার দুই পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়। পঙ্গুত্ববরণ করায় ইজিবাইক চালাতে না পারায় সাংসারে নেমে আসে অভাব অনাটন। এরপর থেকে সংসারের অভাব আর অনাটন মেটাতে এবং মা, মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে শুরু করেন ভিক্ষাবৃত্তি।

কিন্তু তারপরেও যেন তার সংসার এগোচ্ছিল না। অভাব আর পঙ্গুত্বের কারনে স্ত্রী ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র। এখন বৃদ্ধ মা ও সাত বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে তার পরিবার।

অসহায় আর সংসারে অভাবের কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। আজ বুধবার (০৯ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় জেলা-ই-সেবা কেন্দ্রের সামনে এসব মালামাল তুলে দেয়া হয়।

ওই অসহায় পরিবারের অর্থ উপার্জনের জন্য পঙ্গু ব্যক্তিকে দিয়ে মুদি ব্যবসা করাতে চাল, ডাল, তেল, আটা, চিপস, স্যাম্পু, ফেয়ার এন্ড লাভলী, সাবান, গুড়া সাবান, খাতা, কলম, পেনন্সিল, চকলেট, নুডুলস, পেস্ট, টুথব্রাশ, মশলাসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল কিনে দেন।

সহায়তার মালামাল হাতে পেয়ে সাহাবুদ্দিন আবেগাপ্লুত হয়ে আরো বলেন, ডিসি স্যার যে উপকার করলেন সেটা আমি কোন দিন ভুলবো না। তিনি আমার অভিভাবকের মতো কাজ করেছেন। যেটা আমার আত্মীয় স্বজনের করার কথা ছিল সেটা স্যার করেছেন। আমি এই মালামাল দিয়ে ঘরের বারান্দায় দোকান শুরু করবো। বিক্রি করে যে লাভ হবে সেই অর্থ দিয়ে সংসার চালাবো, আর ভিক্ষাবৃত্তি করবো না।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ছেলেটি আমার সাথে দেখা করে তার সমস্যা ও অসহায়ত্বের কথা জানায়। যেহেতু তার পা ভাঙ্গা হাটতে চলতে সমস্যা তাই তাকে মুদি ব্যবসা করতে কিছু মালামাল কিনে দিয়েছি। একটা অসাহায় মানুষের পাশে সামান্য সহায়তা দিতে পেরে ভালো লাগছে। সবারই সমাজের অসাহায় ও দরিদ্র মানুষদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়ানো উচিৎ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

ভিক্ষুকের হাত কর্মের করতে জেলা প্রশাসকের মহানুভবতা

Update Time : ০৪:০৪:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২

গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে পঙ্গু সাহাবুদ্দিন মোল্লা (৩৬)। সড়ক দূর্ঘটনায় পঙ্গু হবার আগে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাতেন।

বিগত আড়াই বছর আগে করোনা চলাকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বেদগ্রাম এলাকায় একটি দ্রুত গতির ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে তার দুই পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়। পঙ্গুত্ববরণ করায় ইজিবাইক চালাতে না পারায় সাংসারে নেমে আসে অভাব অনাটন। এরপর থেকে সংসারের অভাব আর অনাটন মেটাতে এবং মা, মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে শুরু করেন ভিক্ষাবৃত্তি।

কিন্তু তারপরেও যেন তার সংসার এগোচ্ছিল না। অভাব আর পঙ্গুত্বের কারনে স্ত্রী ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র। এখন বৃদ্ধ মা ও সাত বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে তার পরিবার।

অসহায় আর সংসারে অভাবের কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। আজ বুধবার (০৯ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় জেলা-ই-সেবা কেন্দ্রের সামনে এসব মালামাল তুলে দেয়া হয়।

ওই অসহায় পরিবারের অর্থ উপার্জনের জন্য পঙ্গু ব্যক্তিকে দিয়ে মুদি ব্যবসা করাতে চাল, ডাল, তেল, আটা, চিপস, স্যাম্পু, ফেয়ার এন্ড লাভলী, সাবান, গুড়া সাবান, খাতা, কলম, পেনন্সিল, চকলেট, নুডুলস, পেস্ট, টুথব্রাশ, মশলাসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল কিনে দেন।

সহায়তার মালামাল হাতে পেয়ে সাহাবুদ্দিন আবেগাপ্লুত হয়ে আরো বলেন, ডিসি স্যার যে উপকার করলেন সেটা আমি কোন দিন ভুলবো না। তিনি আমার অভিভাবকের মতো কাজ করেছেন। যেটা আমার আত্মীয় স্বজনের করার কথা ছিল সেটা স্যার করেছেন। আমি এই মালামাল দিয়ে ঘরের বারান্দায় দোকান শুরু করবো। বিক্রি করে যে লাভ হবে সেই অর্থ দিয়ে সংসার চালাবো, আর ভিক্ষাবৃত্তি করবো না।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ছেলেটি আমার সাথে দেখা করে তার সমস্যা ও অসহায়ত্বের কথা জানায়। যেহেতু তার পা ভাঙ্গা হাটতে চলতে সমস্যা তাই তাকে মুদি ব্যবসা করতে কিছু মালামাল কিনে দিয়েছি। একটা অসাহায় মানুষের পাশে সামান্য সহায়তা দিতে পেরে ভালো লাগছে। সবারই সমাজের অসাহায় ও দরিদ্র মানুষদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়ানো উচিৎ।