সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ফুলবাড়ীতে সড়ক সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাটের আদর্শ মোড় থেকে তিনকোণা মোড় পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাদাযুক্ত হাঁটু পানি জমে মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। ফলে জন গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পথচারীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।​

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী বালারহাট বাজারের আদর্শ মোড় হয়ে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন থেকে বাজারের তিনকোণা মোড় (ফুলবাড়ী রোড) পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার সড়কটি খানাখন্দ, কাদাযুক্ত অবস্থা হাঁটু পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কের পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়ে কাদাযুক্ত বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে লোকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলাচল করছেন। যানবাহন চলাচলের সময় পানি ছিটে পথচারীর শরীরে যাচ্ছে। সড়কের দুই পাশে স্থাপনা থাকায় পানিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে সড়কে। এ পানি শুকাতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগে।​

ওই সড়ক দিয়ে বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুরুষাফেরুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাফল্য কিন্ডারগার্টেন, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংক ও গজেরকুটি ও বালাতাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বালারহাট বিজিবি ক্যাম্প এই সড়ক দিয়েই যেতে হয় এবং ঐ সড়কের পাশেই নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ।​

প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী চলাচলের অযোগ্য সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। স্কুল-কলেজ যাতায়াতের সময় সড়কের কাদা পানি ছিটকিয়ে পোশাক-পরিচ্ছদে পড়ে নষ্ট হওয়া নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সব সময় অভিভাবকরা থাকছেন চরম দুশ্চিন্তায়। মোটরসাইকেল, অটো ভ্যান, অটো রিক্সা, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।​

অন্যদিকে বালারহাট বাজারের পশ্চিম দিকে নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা ভূমি অফিস ও বালারহাট কেন্দ্রীয় জামেমসজিদ, গরু ও সুপারি পট্টি, বালারহাট ডিএস দাখিল মাদরাসা যাওয়ার মূল সড়ক ২০০ মিটার সড়কটির অবস্থা খুবই করুণ। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করা ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু পানি পরিণত হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারও পথচারী।​

বালারহাট বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম রেজা, পিটন পাল, আবু তাদের ও রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তারা জানান, বালারহাটে সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার হাট বসে। বালারহাটে পশ্চিমে অযোগ্য সড়কের পাশেই বসে গরু, ছাগল ও সুপারির হাট। কাপড়-চোপড়। অন্যদিকে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে ধান, আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগী ও সাইকেলসহ সব ধরনের জিনিস এই বাজারে বেচা-কেনা হয়। দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এই বাজারে। এই বাজার থেকে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পায়। অথচ সামান্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পাকা সড়কে পানি জমে থাকছে। চেয়ারম্যান, মেম্বার এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনেই যাতায়াত করে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।​

আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী শুভশ্রী রায়, তানজিলা আক্তার ও নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হিয়ামনি জানান, আমরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। বিকল্প সড়ক না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কাঁদাযুক্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। বৃষ্টির সময় তো একদমই চলাচলের অনুপযোগী থাকে। এমনকি বর্ষা মৌসুম ছাড়াও শুষ্ক মৌসুমেও ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।​

নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ সরকার ও বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, শুধুমাত্র আমাদের দুই প্রতিষ্ঠানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে প্রতিষ্ঠানে আসে। এছাড়া আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করছেন। এই দুই অধ্যক্ষ আরও জানান, বর্ষা মৌসুম আসলেই বালারহাটের এই দুই স্থানে এত বেশি ভোগান্তি হয় যা বলা বাহুল্য। সবারই খুব কষ্ট হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

গাইবান্ধায় নবাগত ও বিদায়ী পুলিশ সুপারের সংবর্ধনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান

​ফুলবাড়ীতে সড়ক সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি

Update Time : ১১:২০:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাটের আদর্শ মোড় থেকে তিনকোণা মোড় পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাদাযুক্ত হাঁটু পানি জমে মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। ফলে জন গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পথচারীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।​

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী বালারহাট বাজারের আদর্শ মোড় হয়ে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন থেকে বাজারের তিনকোণা মোড় (ফুলবাড়ী রোড) পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার সড়কটি খানাখন্দ, কাদাযুক্ত অবস্থা হাঁটু পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কের পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়ে কাদাযুক্ত বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে লোকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলাচল করছেন। যানবাহন চলাচলের সময় পানি ছিটে পথচারীর শরীরে যাচ্ছে। সড়কের দুই পাশে স্থাপনা থাকায় পানিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে সড়কে। এ পানি শুকাতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগে।​

ওই সড়ক দিয়ে বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুরুষাফেরুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাফল্য কিন্ডারগার্টেন, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংক ও গজেরকুটি ও বালাতাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বালারহাট বিজিবি ক্যাম্প এই সড়ক দিয়েই যেতে হয় এবং ঐ সড়কের পাশেই নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ।​

প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী চলাচলের অযোগ্য সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। স্কুল-কলেজ যাতায়াতের সময় সড়কের কাদা পানি ছিটকিয়ে পোশাক-পরিচ্ছদে পড়ে নষ্ট হওয়া নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সব সময় অভিভাবকরা থাকছেন চরম দুশ্চিন্তায়। মোটরসাইকেল, অটো ভ্যান, অটো রিক্সা, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।​

অন্যদিকে বালারহাট বাজারের পশ্চিম দিকে নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা ভূমি অফিস ও বালারহাট কেন্দ্রীয় জামেমসজিদ, গরু ও সুপারি পট্টি, বালারহাট ডিএস দাখিল মাদরাসা যাওয়ার মূল সড়ক ২০০ মিটার সড়কটির অবস্থা খুবই করুণ। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করা ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু পানি পরিণত হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারও পথচারী।​

বালারহাট বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম রেজা, পিটন পাল, আবু তাদের ও রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তারা জানান, বালারহাটে সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার হাট বসে। বালারহাটে পশ্চিমে অযোগ্য সড়কের পাশেই বসে গরু, ছাগল ও সুপারির হাট। কাপড়-চোপড়। অন্যদিকে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে ধান, আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগী ও সাইকেলসহ সব ধরনের জিনিস এই বাজারে বেচা-কেনা হয়। দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এই বাজারে। এই বাজার থেকে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পায়। অথচ সামান্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পাকা সড়কে পানি জমে থাকছে। চেয়ারম্যান, মেম্বার এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনেই যাতায়াত করে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।​

আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী শুভশ্রী রায়, তানজিলা আক্তার ও নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হিয়ামনি জানান, আমরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। বিকল্প সড়ক না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কাঁদাযুক্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। বৃষ্টির সময় তো একদমই চলাচলের অনুপযোগী থাকে। এমনকি বর্ষা মৌসুম ছাড়াও শুষ্ক মৌসুমেও ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।​

নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ সরকার ও বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, শুধুমাত্র আমাদের দুই প্রতিষ্ঠানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে প্রতিষ্ঠানে আসে। এছাড়া আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করছেন। এই দুই অধ্যক্ষ আরও জানান, বর্ষা মৌসুম আসলেই বালারহাটের এই দুই স্থানে এত বেশি ভোগান্তি হয় যা বলা বাহুল্য। সবারই খুব কষ্ট হয়।