সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‎দিনাজপুরে মাজারে হামলা,ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ১৬ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ


‎দিনাজপুরে পীর রহিম শাহের মাজারে দুষ্কৃতীকারীদের হামলা,ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ও ৩৫ ভরি স্বর্ণাঅলংকার লুটপাট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা।
এঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মাজার কতৃপক্ষ।

পুলিশ জানায় ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা যায়,গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ‘সিরাতে মুস্তাকিম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়।

‎প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা লাঠি হাতে মিছিল নিয়ে মাজারের দিকে এগিয়ে আসে এবং সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তারা মাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পর ঐ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও নিরাপত্তার অভাবে পুলিশ তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি।

‎ঘোড়াঘাট থানার ওসি নাজমুল হক বলেন “বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে অবস্থান নিয়ে ভাঙচুর চালায়। তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে পারেনি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, নির্দেশনা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

‎ঘোড়াঘাটের রানীগঞ্জ বাজারে পীর রহিম শাহ ভাণ্ডারীর মাজারে প্রতি বছর ২ থেকে ৪ মার্চ বার্ষিক ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এবারও আগামী রোববার থেকে এই ওরস মাহফিলের আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে, স্থানীয় ‘সিরাতে মুস্তাকিম পরিষদ’ সংগঠন এই ওরসের বিরোধিতা করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। তাদের দাবি,ওরসের নামে সেখানে মাদক সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপ হয়ে থাকে,যা বন্ধ করা প্রয়োজন।

‎হঠাৎ করে শুক্রবার বিকেলে সংগঠনটির লোকজন লাঠি সোঠা নিয়ে মিছিল বের করে এবং মাজারের সামনে এসে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা মাজারে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।

‎এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ঐদিন রাত ৯টা পর্যন্ত পুলিশের কোনো দল ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে পারেনি।

‎এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি,তবে মাজার এলাকা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাতঃ গত ২৮ ফেব্রুয়ারী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানাধীন কশিগাড়ী গ্রামে অবস্থিত রহিম শাহ ভান্ডারীর দরবার শরিফের বাৎসরিক উরশ চলাকালীন মুফতী মনোয়ার মোল্লাহ,মোজাফফর মোল্লাহ, মোজাম্মেল মোল্লাহ সকলের পিতা, মোঃ কাদের মোল্লাহ, গ্রাম বারো পাইকার গড়, থানা ঘোরাঘাট জেলা দিনাজপুর। শতাধিক উগ্রবাদীদের নিয়ে দরবার শরিফের মাজারে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।হামলাকারীরা ভক্তদের দেওয়া ৬টি গরু ১৭ টি খাসি, মাজারের দান বাক্সের প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ও আলমারিতে থাকা ১০ লক্ষ টাকা, প্রায় ৩৫ ভড়ি স্বর্ন লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করে। মাজারের খাদেম সহ, প্রায় ২০ -২৫ জনকে এলোপাথারী মারধর করে গুরুতর আহত করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ঘটনাস্থলে পুলিশও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এই বিষয়ে ০৩/০৩/২০২৫ ইং মাজার কর্তৃপক্ষ মোঃ আলম সরকার, পিতা আব্দুল জলিল, সাং মোগলেশ পুর, থানা ঘোড়াঘাট জেলা দিনাজপুর বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করে। এ বিষয়ে মুঠোফোনে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

উক্ত আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত দরবারের সম্পত্তি আত্মসাৎ এর নিমিত্তে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল,হামলাকারীরা নামে বেনামে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয় মামলা না করার জন্য প্রান নাশের হুমকি ও দিতে থাকে। বর্তমানে মাজারের খাদেম মোঃ শহিদুল ইসলাম ও তার পরিবার প্রান ভয়ে পালিয়ে জীবন যাপন করছে।
এ ঘটনার হামলাকারীদের সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী ভুক্তভোগীদের।


Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

‎দিনাজপুরে মাজারে হামলা,ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ১৬ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ

Update Time : ০৬:২৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫


‎দিনাজপুরে পীর রহিম শাহের মাজারে দুষ্কৃতীকারীদের হামলা,ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ও ৩৫ ভরি স্বর্ণাঅলংকার লুটপাট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা।
এঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মাজার কতৃপক্ষ।

পুলিশ জানায় ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা যায়,গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ‘সিরাতে মুস্তাকিম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়।

‎প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা লাঠি হাতে মিছিল নিয়ে মাজারের দিকে এগিয়ে আসে এবং সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তারা মাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পর ঐ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও নিরাপত্তার অভাবে পুলিশ তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি।

‎ঘোড়াঘাট থানার ওসি নাজমুল হক বলেন “বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে অবস্থান নিয়ে ভাঙচুর চালায়। তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে পারেনি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, নির্দেশনা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

‎ঘোড়াঘাটের রানীগঞ্জ বাজারে পীর রহিম শাহ ভাণ্ডারীর মাজারে প্রতি বছর ২ থেকে ৪ মার্চ বার্ষিক ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এবারও আগামী রোববার থেকে এই ওরস মাহফিলের আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে, স্থানীয় ‘সিরাতে মুস্তাকিম পরিষদ’ সংগঠন এই ওরসের বিরোধিতা করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। তাদের দাবি,ওরসের নামে সেখানে মাদক সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপ হয়ে থাকে,যা বন্ধ করা প্রয়োজন।

‎হঠাৎ করে শুক্রবার বিকেলে সংগঠনটির লোকজন লাঠি সোঠা নিয়ে মিছিল বের করে এবং মাজারের সামনে এসে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা মাজারে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।

‎এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ঐদিন রাত ৯টা পর্যন্ত পুলিশের কোনো দল ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে পারেনি।

‎এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি,তবে মাজার এলাকা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাতঃ গত ২৮ ফেব্রুয়ারী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানাধীন কশিগাড়ী গ্রামে অবস্থিত রহিম শাহ ভান্ডারীর দরবার শরিফের বাৎসরিক উরশ চলাকালীন মুফতী মনোয়ার মোল্লাহ,মোজাফফর মোল্লাহ, মোজাম্মেল মোল্লাহ সকলের পিতা, মোঃ কাদের মোল্লাহ, গ্রাম বারো পাইকার গড়, থানা ঘোরাঘাট জেলা দিনাজপুর। শতাধিক উগ্রবাদীদের নিয়ে দরবার শরিফের মাজারে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।হামলাকারীরা ভক্তদের দেওয়া ৬টি গরু ১৭ টি খাসি, মাজারের দান বাক্সের প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ও আলমারিতে থাকা ১০ লক্ষ টাকা, প্রায় ৩৫ ভড়ি স্বর্ন লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করে। মাজারের খাদেম সহ, প্রায় ২০ -২৫ জনকে এলোপাথারী মারধর করে গুরুতর আহত করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ঘটনাস্থলে পুলিশও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এই বিষয়ে ০৩/০৩/২০২৫ ইং মাজার কর্তৃপক্ষ মোঃ আলম সরকার, পিতা আব্দুল জলিল, সাং মোগলেশ পুর, থানা ঘোড়াঘাট জেলা দিনাজপুর বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করে। এ বিষয়ে মুঠোফোনে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

উক্ত আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত দরবারের সম্পত্তি আত্মসাৎ এর নিমিত্তে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল,হামলাকারীরা নামে বেনামে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয় মামলা না করার জন্য প্রান নাশের হুমকি ও দিতে থাকে। বর্তমানে মাজারের খাদেম মোঃ শহিদুল ইসলাম ও তার পরিবার প্রান ভয়ে পালিয়ে জীবন যাপন করছে।
এ ঘটনার হামলাকারীদের সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী ভুক্তভোগীদের।