সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ভূমি ও নিরাপত্তার দাবিতে সমাবেশ


গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাঁওতালদের ভূমি ও নিরাপত্তা দাবিতে সমাবেশ হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাটে বৃটিশ সরেনের বাড়ির সামনে এ সমাবেশ হয়।

আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ, এএলআরডি, মানঝি পরিষদ ও জনউদ্যোগ যৌথভাবে এর আয়োজন করে।

এতে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা আইন কলেজের শিক্ষার্থী বৃটিশ সরেন।

সমাবেশে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “গত ৩ জানুয়ারি সকালে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজনসহ রাজাবিরাট গ্রামের বৃটিশ সরেনের বাড়িতে হামলা করে জমি ও পুকুরের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাঁওতালরা বাধা দিলে তারা মারপিট করে। এতে বৃটিশ সরেনের মা ফিলোমিনা হাসদা গুরুতর আহত হন। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।”

আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, “পরে ওই রাতেই চেয়ারম্যান রফিকুলের লোকজন বৃটিশ সরেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ রফিকুল চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে। সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান জামিনে মুক্ত হয়ে সাঁওতালদের কৃষি ও সেচে বাধা ও বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছে।”

বৃটিশ সরেন বলেন, “এখন ওই এলাকার সাঁওতালদের একমাত্র সমাধিস্থল শক্ত জাল ঘিরে রেখেছেন ও মৃতদের সমাধিস্থ করতে সাঁওতালদের বাধা দিচ্ছে। আমরা নিরীহ সাঁওতালদের ভূমি ও জীবনের নিরাপত্তা দাবি জানাচ্ছি।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলনের জেলা নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের জেলা সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, মানঝি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাখন মার্ডি, সহ সাধারণ সম্পাদক রূপ সরেন, কোষাধ্যক্ষ শ্যামল হেমব্রম ও সদস্য তারামনি সরেন, সাঁওতাল নেতা সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, শ্যামবালা হেমব্রম, জুলিয়াস সরেন, মেরিনা সরেন।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সাঁওতালরা সমাধিস্থল ও দখলকৃত পুকুরপাড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

কৃষি ও সেচে বাধা এবং সাঁওতালদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, “তাদের সব অভিযোগই মিথ্যা।”

ওই এলাকার সাঁওতালদের সমাধিস্থলের জায়গাটি নিজের দাবি করে তিনি বলেন, “তাদের কেউ মারা গেলে সমাধিস্থ করার সময় জায়গাটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ভূমি ও নিরাপত্তার দাবিতে সমাবেশ

Update Time : ০৮:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫


গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাঁওতালদের ভূমি ও নিরাপত্তা দাবিতে সমাবেশ হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাটে বৃটিশ সরেনের বাড়ির সামনে এ সমাবেশ হয়।

আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ, এএলআরডি, মানঝি পরিষদ ও জনউদ্যোগ যৌথভাবে এর আয়োজন করে।

এতে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা আইন কলেজের শিক্ষার্থী বৃটিশ সরেন।

সমাবেশে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “গত ৩ জানুয়ারি সকালে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজনসহ রাজাবিরাট গ্রামের বৃটিশ সরেনের বাড়িতে হামলা করে জমি ও পুকুরের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাঁওতালরা বাধা দিলে তারা মারপিট করে। এতে বৃটিশ সরেনের মা ফিলোমিনা হাসদা গুরুতর আহত হন। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।”

আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, “পরে ওই রাতেই চেয়ারম্যান রফিকুলের লোকজন বৃটিশ সরেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ রফিকুল চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে। সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান জামিনে মুক্ত হয়ে সাঁওতালদের কৃষি ও সেচে বাধা ও বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছে।”

বৃটিশ সরেন বলেন, “এখন ওই এলাকার সাঁওতালদের একমাত্র সমাধিস্থল শক্ত জাল ঘিরে রেখেছেন ও মৃতদের সমাধিস্থ করতে সাঁওতালদের বাধা দিচ্ছে। আমরা নিরীহ সাঁওতালদের ভূমি ও জীবনের নিরাপত্তা দাবি জানাচ্ছি।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলনের জেলা নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের জেলা সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, মানঝি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাখন মার্ডি, সহ সাধারণ সম্পাদক রূপ সরেন, কোষাধ্যক্ষ শ্যামল হেমব্রম ও সদস্য তারামনি সরেন, সাঁওতাল নেতা সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, শ্যামবালা হেমব্রম, জুলিয়াস সরেন, মেরিনা সরেন।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সাঁওতালরা সমাধিস্থল ও দখলকৃত পুকুরপাড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

কৃষি ও সেচে বাধা এবং সাঁওতালদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, “তাদের সব অভিযোগই মিথ্যা।”

ওই এলাকার সাঁওতালদের সমাধিস্থলের জায়গাটি নিজের দাবি করে তিনি বলেন, “তাদের কেউ মারা গেলে সমাধিস্থ করার সময় জায়গাটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।”