1. info@dainikbd24.com : দৈনিক বাংলাদেশ : দৈনিক বাংলাদেশ
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গোবিন্দগঞ্জে স্কুল ছাত্রের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সামান্য বৃষ্টিতেই নরকযন্ত্রণা: চলাচলের অযোগ্য কাউন্সিল বাজার-মিয়াপাড়া-গাইবান্ধা সড়ক গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান; ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি ঘাগোয়া এম.বি হাইস্কুলে নতুন সভাপতি আল আমিন নিয়মিত পরীক্ষার্থী বহিস্কার পলাশবাড়ীতে এক প্রক্সি পরীক্ষার্থী আটক পলাশবাড়ীর নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল আলম পিএএ। ফুলছড়ি উপজেলা যুবদলকে শক্তিশালী সংগঠনে রূপ দিয়েছেন নজরুল ইসলাম নান্টু গাইবান্ধার কুপতলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণ উদযাপন একজন পুলিশ,বদলে দিয়েছে উপজেলা প্রশংসিত অর্জন করেছে সাধারণ মানুষের ওসি রতন শেখ। পাঁচবিবিতে বিএনপির উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

গোবিন্দগঞ্জে জমির আলু তোলার আগেই হিমাগারের বুকিং স্লিপ শেষ, বিপাকে কৃষক

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

গত মৌসুমে আলুর দাম ভালোই পেয়েছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক নয়ন সাহা। আর এতেই এবার আরও দুই বিঘা বেশি জমিতে আলু আবাদ করেছেন তিনি। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই আলু তোলার উপযোগী হবে। কিন্তু বাজারে এখন দাম কম থাকায় খেতের আলু হিমাগারে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাই আগাম স্লিপের আশায় একের পর এক হিমাগারে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কোথাও স্লিপ পাননি। উপায়ন্তর না দেখে আলু সংরক্ষণের হাল ছেড়ে দিয়েছেন নয়ন। এই কৃষকের দাবি, হিমাগার কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে মজুতকারীরা আলু সংরক্ষণের স্লিপ আগেভাগেই হাতিয়ে নিয়েছেন। ফলে সাধারণ চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৮ হেক্টরের বেশি জমিতে। আর এ থেকে পাওয়া যাবে ২ লাখ ৪ হাজার ৯৯৬ টন আলু। অন্যদিকে আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলায় ৪টি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারের ৩৬ হাজার ৫০০ টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। ফলে চাষিদের উৎপাদিত অধিকাংশ আলুই থেকে যাচ্ছে সংরক্ষণের বাইরে। সংরক্ষণের সুযোগ না পেয়ে কৃষক তাঁদের খেতের আলু বাজারে বিক্রি করে দেন। আর এতেই বাজারে আলুর দাম আরও কমে যাবে।

হিমাগারে আলু রাখার জন্য এবার লুজ বুকিংয়ের রেট হচ্ছে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আলু ৪০০ টাকা (প্রতি কেজি আলুর জন্য ৮ টাকা)। আলু সংরক্ষণ করতে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আগাম স্লিপ বিতরণ করে। এসব স্লিপ নিতে প্রতি বস্তা আলুর বিপরীতে কৃষককে ৫০ টাকা আগাম গুনতে হচ্ছে।

উপজেলার বকচরে গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ-১, মদনপুরে এপেক্স এগ্রিসায়েন্স লিমিটেড, সূর্যগাড়িতে গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ-২ ও বকচরে হিমাদ্রী লিমিটেডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলু সংরক্ষণের স্লিপ সংগ্রহ করতে একের পর এক কৃষকেরা আসছেন। কিন্তু স্লিপ না পেয়ে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। কৃষকদের অভিযোগ, প্রকৃত কৃষকেরা আলু সংরক্ষণের স্লিপ সংগ্রহ করতে পারেননি। আর এতে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত আলু খেত থেকে তোলার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হবেন। তাঁরা আগামী মৌসুমের জন্য বীজ আলুও সংরক্ষণ করতে পারবেন না।

এদিকে, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আলু চাষী ও ব্যবসায়ীদের দুর্বার আন্দোলনের মুখে ৪টি হিমাগার সিলগালা করেছে উপজেলা প্রশাসন। অপরদিকে, বগুড়ার শাহজাহানপুরে বস্তা প্রতি ৫০ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করায় তীব্র আন্দোলনের মুখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় কোনো ভাড়া বৃদ্ধি না করেই গতবারের ভাড়া বহাল রাখা হয়। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জের হিমাগার মালিকরা প্রশাসনকে গুরুত্ব না দেয়ায় দীর্ঘদিনেও কৃষকদের আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা ও হিমাগারের ভাড়া নির্ধারণের সুরাহা হয়নি।

শাখাহার ইউনিয়নের বাল্ল্যা গ্রামের কৃষক হেলাল সরকার এবার ছয় একর জমিতে আলু আবাদ করেছেন। আলু সংরক্ষণের স্লিপের সংকটের খবর পেয়ে কয়েকটি হিমাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোনো স্লিপের ব্যবস্থা করতে পারেননি। আজ শনিবার সকালে তিনি অভিযোগ করে বলেন, হিমাগার কর্তৃপক্ষ প্রকৃত চাষিদের নয়, কেবল মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে আলু রাখার স্লিপ বিক্রি করেছেন। ফলে এলাকার চাষিরা হিমাগারে আলু রাখার সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে আলু আবাদ করে এবার তাঁরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়বেন।

হিমাদ্রী লিমিটেডের ম্যানেজার মোজাম্মেল হক বলেন, বুকিং স্লিপ শেষ হয়ে গেছে। বিগত বছর আমাদের হিমাগারে আলু রাখা ব্যবসায়ীদের এবারও বুকিং স্লিপ দেয়া হয়েছে। তবে সেটা পরিমানে অনেক কম। কালো বাজারে বুকিং স্লিপ বিক্রির কোনো নিয়ম নেই।

গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার সজিব বলেন, এবছর আমরা স্থানীয় কৃষকদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি। মজুতদারদের কোন কার্ড দিচ্ছি না। কৃষকেরা ৫ থেকে ১০ বস্তা করে আলু নিয়ে আসলে কোল্ড স্টোরেজে রাখার কোনো সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কোল্ড স্টোরেজ দু’টির ধারণ ক্ষমতা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বস্তা। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার বস্তা আলু বুকিং হয়েছে।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারে, সে কারণে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। হিমাগার মালিক সমিতি আমাদের জানিয়েছেন তাদের হিমাগারগুলোতে যথেষ্ট জায়গা ফাঁকা রয়েছে। কৃষকদের বীজ আলু রাখতে কোন সমস্যা হবে না। কালো বাজারে বুকিং স্লিপ বিক্রি বা কাউকে হস্তান্তর করা যাবে না। কেউ অতিরিক্ত আলু মজুতের কারসাজি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর...

© All Rights Reserved© 2022 DainikBD24

Theme Customized BY Sky Host BD