সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কে এই আবু এরশাদ? পলাশবাড়ী সরকারি কলেজের হিসাব রক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তদন্ত কমিটি।

পলাশবাড়ী সরকারি কলেজের হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ মোঃ মিজানুর রহনানের নানাবিধ অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির তদন্ত ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তদন্ত কমিটি। কলেজের একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানাযায়, এই অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত আছে খোদ তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যসহ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান। যে কারনেই ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে তদন্ত রিপোট।

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টন্বর হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ মোঃমিজানুর রহনানের নানাবিধ অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির অভিযোগ এনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পলাশবাড়ী সরকারী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকলে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সামাল দিতে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান গনিত বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক অলঙ্গ মহন রায় কে আহবায়ক করে ২জন ছাত্র প্রতিনিধিসহ ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।ওই কমিটিকে ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোট জমা দেয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিলেও এ রিপোট লেখা পর্যন্ত তদন্ত রিপোট জমা দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান অলঙ্গ মহনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরক্তির সুরে বলেন,রিপোট এখনো জমা দেয়া হয়নি,তবে দুই এক দিনের মধ্যেই দেয়া হবে। আপনি কি লেখেন, লেখেন! আপনি আগামী বুধবার(০২/১০/২৪) কলেজে আসেন।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান জানান,শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সঠিক নয়।আগামী বুধবার আসেন,রিপোটটা দেখানো হবে।

কে এই আবু এরশাদ মোঃ মিজানুর?

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী সরকারী কলেজের হিসাব রক্ষক গাইবান্ধা সদর উপজেলার খানাকা শরিফ এলাকার বাসিন্দা মৃত সমশের আলী প্রধানের ছেলে। এই আবু এরশাদ মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বিগত সময়ে তিনি বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজের ৩৫ লক্ষ টাকা আত্নসাতের সাথে জড়িত থাকায় দুদকের মামলার চার্টসিট ভুক্ত আসামী। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ তাকে দক্ষিনাঞ্চলে শাস্তি মূলক বদলীর আদেশ দেয়। তিনি সেখানে যোগদান না করে তৎকালীন আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে ওই বদলীর আদেশ বাতিল করে নিজ এলাকায় বদলী নিয়ে বিগত ২০১৩ সালে পলাশবাড়ী সরকারী কলেজে যোগদান করেন। এখানে যোগদানের পর থেকেই তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতি করে নামে-বেনামে সম্পদের পাহার গড়েছেন।বিগত সময়ে বেশ কয়েকজন সাবেক অধ্যক্ষের সাথে যোগসাজস করে তিনি কলেজের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাত করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

অপরদিকে সাবেক অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বাড়ী সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের এলাকায় হওয়ায় তিনিও মন্ত্রীর আত্নীয় পরিচয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতে জড়িয়ে পড়েন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ দূর্নীতির বরপূত্র, ওই দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের সাথে শ্রোতে গা ভাসিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভয় ভীতি দেখিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাত করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এদিকে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ওই হিসাব রক্ষক ৫ আগষ্টের পূর্বে দম্ভ করে বলেছিলেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। আমি আওয়ামীলীগ করি,দল আমার সাথে আছে। সময়ের ব্যবধানে ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান অত্র কলেজে যোগদানের পর হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ অধ্যক্ষকের সাথে যোগ সাজস করে পুনঃরায় অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে।

কলেজের ছাত্র সংগঠন গুলোর নেতৃবৃন্দ এই হিসাব রক্ষককে একাধিক বার সতর্ক করলেও তিনি সে দিকে কর্নপাত না করে দম্ভ করে বলেন, দুদকই আমার কিচ্ছু করতে পারে নাই,অধ্যক্ষ স্যার আমার লোক,আমার কেউ কিছু করতে পারবে না। বর্তমানে ছাত্র-জনাতার বিপ্লবের পর সে এখন ভোল্ট পালটে সুকৌশলে অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এই দূর্নীতিবাজ আবু এরশাদ মোঃ মিজানুরদের লাগামটা টানবে কে?

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

কে এই আবু এরশাদ? পলাশবাড়ী সরকারি কলেজের হিসাব রক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তদন্ত কমিটি।

Update Time : ১১:২১:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

পলাশবাড়ী সরকারি কলেজের হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ মোঃ মিজানুর রহনানের নানাবিধ অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির তদন্ত ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তদন্ত কমিটি। কলেজের একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানাযায়, এই অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত আছে খোদ তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যসহ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান। যে কারনেই ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে তদন্ত রিপোট।

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টন্বর হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ মোঃমিজানুর রহনানের নানাবিধ অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির অভিযোগ এনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পলাশবাড়ী সরকারী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকলে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সামাল দিতে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান গনিত বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক অলঙ্গ মহন রায় কে আহবায়ক করে ২জন ছাত্র প্রতিনিধিসহ ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।ওই কমিটিকে ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোট জমা দেয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিলেও এ রিপোট লেখা পর্যন্ত তদন্ত রিপোট জমা দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান অলঙ্গ মহনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরক্তির সুরে বলেন,রিপোট এখনো জমা দেয়া হয়নি,তবে দুই এক দিনের মধ্যেই দেয়া হবে। আপনি কি লেখেন, লেখেন! আপনি আগামী বুধবার(০২/১০/২৪) কলেজে আসেন।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান জানান,শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সঠিক নয়।আগামী বুধবার আসেন,রিপোটটা দেখানো হবে।

কে এই আবু এরশাদ মোঃ মিজানুর?

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী সরকারী কলেজের হিসাব রক্ষক গাইবান্ধা সদর উপজেলার খানাকা শরিফ এলাকার বাসিন্দা মৃত সমশের আলী প্রধানের ছেলে। এই আবু এরশাদ মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বিগত সময়ে তিনি বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজের ৩৫ লক্ষ টাকা আত্নসাতের সাথে জড়িত থাকায় দুদকের মামলার চার্টসিট ভুক্ত আসামী। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ তাকে দক্ষিনাঞ্চলে শাস্তি মূলক বদলীর আদেশ দেয়। তিনি সেখানে যোগদান না করে তৎকালীন আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে ওই বদলীর আদেশ বাতিল করে নিজ এলাকায় বদলী নিয়ে বিগত ২০১৩ সালে পলাশবাড়ী সরকারী কলেজে যোগদান করেন। এখানে যোগদানের পর থেকেই তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতি করে নামে-বেনামে সম্পদের পাহার গড়েছেন।বিগত সময়ে বেশ কয়েকজন সাবেক অধ্যক্ষের সাথে যোগসাজস করে তিনি কলেজের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাত করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

অপরদিকে সাবেক অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বাড়ী সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের এলাকায় হওয়ায় তিনিও মন্ত্রীর আত্নীয় পরিচয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতে জড়িয়ে পড়েন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ দূর্নীতির বরপূত্র, ওই দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের সাথে শ্রোতে গা ভাসিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভয় ভীতি দেখিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাত করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এদিকে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ওই হিসাব রক্ষক ৫ আগষ্টের পূর্বে দম্ভ করে বলেছিলেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। আমি আওয়ামীলীগ করি,দল আমার সাথে আছে। সময়ের ব্যবধানে ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন খান অত্র কলেজে যোগদানের পর হিসাব রক্ষক আবু এরশাদ অধ্যক্ষকের সাথে যোগ সাজস করে পুনঃরায় অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে।

কলেজের ছাত্র সংগঠন গুলোর নেতৃবৃন্দ এই হিসাব রক্ষককে একাধিক বার সতর্ক করলেও তিনি সে দিকে কর্নপাত না করে দম্ভ করে বলেন, দুদকই আমার কিচ্ছু করতে পারে নাই,অধ্যক্ষ স্যার আমার লোক,আমার কেউ কিছু করতে পারবে না। বর্তমানে ছাত্র-জনাতার বিপ্লবের পর সে এখন ভোল্ট পালটে সুকৌশলে অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এই দূর্নীতিবাজ আবু এরশাদ মোঃ মিজানুরদের লাগামটা টানবে কে?