সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে পাঠ্যপুস্তকে অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি

‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদে আবেদন জানানো হয়েছে।

রোববার সকালে গাইবান্ধা সন্ধানী ডোনার ক্লাবের সদস্য রওশন আলম পাপুল ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন পাঠিয়ে এই দাবি জানান। তিনি ২০১১-২০১২ কার্যবর্ষে দপ্তর সম্পাদক এবং ২০১২-২০১৩ কার্যবর্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রওশন আলম পাপুল আবেদনে উল্লেখ করেন, শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদানের ভীতি এখনো দূর হয়নি। নানা ভ্রান্ত ধারনায় তারা এখনো আচ্ছন্ন। পরিবারের কোনো সদস্যের রক্তের প্রয়োজনে পরিবারের সদস্যরাই রক্ত দেবে না। এমনকি স্বজনরাও দেবে না। কিন্তু অন্যের রক্ত নিতে তারা বেশ আগ্রহী। প্রয়োজনে টাকা দিয়ে বাহিরে নেশাখোর ও দালালের কাছে থেকে গোপনে (বেসরকারি ক্লিনিক এবং হাসপাতালেও) রক্ত কিনতেও তারা দ্বিধাবোধ করেন না। বহু মানুষের কাছে রক্তদান না করার প্রথম অজুহাত হচ্ছে- আমার শরীরে কি রক্ত আছে? আমরা কি প্রত্যেকদিন গোশত-মাছ খাই? আমার যে স্বাস্থ্য (চিকন শরীর) আমাকেই রক্ত দেওয়া লাগে। এমন নানা অজুহাতে স্বেচ্ছাসেবকরা বেশ অভ্যস্ত। শুধু তাই নয়, মরণোত্তর চক্ষুদানসহ নিরাপদ ও সুস্থ্য থাকতে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন (বেসরকারি যেসব ভ্যাকসিন কিনতে হয়) গ্রহনে বেশ অনীহা লক্ষ্য করা গেছে বহু মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এই প্রবণতা আরও অনেক বেশী। রক্তদানের কথা বললে তারা এখনো নাক ছিটকান। এর থেকে বাদ যাননা শিক্ষিতরাও। তাই স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদানসহ ভ্যাকসিন গ্রহনের বিষয়টি আগামী বছরের (২০২৫ শিক্ষাবর্ষের) নতুন বই ছাপানোর আগেই ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে রওশন আলম পাপুল বলেন, দিনকে দিন নিরাপদ রক্তদাতার সংখ্যা কমছে। কেননা মানুষ এলার্জি, ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, হেপাটাইটিস বি ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর উপর রয়েছে থ্যালাসেমিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের প্রতি মাসে দুই তিন ব্যাগ বা তারও বেশি রক্ত প্রয়োজনের বিষয়টি।

এতে করে রক্তের যে চাহিদা তা পূরণ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে। যা সামনে এই সংকট আরও বাড়বে বৈকি কখনো কমবে না। তাই নতুন নতুন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানাচ্ছি। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদানের ভীতি কাটবে। কারো রক্তের প্রয়োজন পড়লে শিক্ষার্থীরাই উদ্বুদ্ধ করতে পারবে রক্তদানে সমর্থবান নারী-পুরুষদের। কেননা সাধারনত এই সময়টাতে শিক্ষার্থীরা বাড়ী থেকেই পড়ালেখা করে থাকে। তাই গ্রামে বা পাড়ায় কারো রক্ত প্রয়োজন হলে নিজেরাই সচেতন করতে পারবে। এসএসসি পাশের পর শিক্ষার্থীরা কলেজে পড়ার সময় ১৮ বছর হলে নিজেরাই স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ মরণোত্তর চক্ষুদান ও ভ্যাকসিন গ্রহনে আগ্রহী হবে পড়াশোনা ও পূর্বের উদ্বুদ্ধকরণ কাজ থেকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে পাঠ্যপুস্তকে অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি

Update Time : ০৫:৪০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদে আবেদন জানানো হয়েছে।

রোববার সকালে গাইবান্ধা সন্ধানী ডোনার ক্লাবের সদস্য রওশন আলম পাপুল ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন পাঠিয়ে এই দাবি জানান। তিনি ২০১১-২০১২ কার্যবর্ষে দপ্তর সম্পাদক এবং ২০১২-২০১৩ কার্যবর্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রওশন আলম পাপুল আবেদনে উল্লেখ করেন, শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদানের ভীতি এখনো দূর হয়নি। নানা ভ্রান্ত ধারনায় তারা এখনো আচ্ছন্ন। পরিবারের কোনো সদস্যের রক্তের প্রয়োজনে পরিবারের সদস্যরাই রক্ত দেবে না। এমনকি স্বজনরাও দেবে না। কিন্তু অন্যের রক্ত নিতে তারা বেশ আগ্রহী। প্রয়োজনে টাকা দিয়ে বাহিরে নেশাখোর ও দালালের কাছে থেকে গোপনে (বেসরকারি ক্লিনিক এবং হাসপাতালেও) রক্ত কিনতেও তারা দ্বিধাবোধ করেন না। বহু মানুষের কাছে রক্তদান না করার প্রথম অজুহাত হচ্ছে- আমার শরীরে কি রক্ত আছে? আমরা কি প্রত্যেকদিন গোশত-মাছ খাই? আমার যে স্বাস্থ্য (চিকন শরীর) আমাকেই রক্ত দেওয়া লাগে। এমন নানা অজুহাতে স্বেচ্ছাসেবকরা বেশ অভ্যস্ত। শুধু তাই নয়, মরণোত্তর চক্ষুদানসহ নিরাপদ ও সুস্থ্য থাকতে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন (বেসরকারি যেসব ভ্যাকসিন কিনতে হয়) গ্রহনে বেশ অনীহা লক্ষ্য করা গেছে বহু মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এই প্রবণতা আরও অনেক বেশী। রক্তদানের কথা বললে তারা এখনো নাক ছিটকান। এর থেকে বাদ যাননা শিক্ষিতরাও। তাই স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদানসহ ভ্যাকসিন গ্রহনের বিষয়টি আগামী বছরের (২০২৫ শিক্ষাবর্ষের) নতুন বই ছাপানোর আগেই ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে রওশন আলম পাপুল বলেন, দিনকে দিন নিরাপদ রক্তদাতার সংখ্যা কমছে। কেননা মানুষ এলার্জি, ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, হেপাটাইটিস বি ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর উপর রয়েছে থ্যালাসেমিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের প্রতি মাসে দুই তিন ব্যাগ বা তারও বেশি রক্ত প্রয়োজনের বিষয়টি।

এতে করে রক্তের যে চাহিদা তা পূরণ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে। যা সামনে এই সংকট আরও বাড়বে বৈকি কখনো কমবে না। তাই নতুন নতুন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ‘রক্তদানে ভয় নয়’ নামে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানাচ্ছি। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদানের ভীতি কাটবে। কারো রক্তের প্রয়োজন পড়লে শিক্ষার্থীরাই উদ্বুদ্ধ করতে পারবে রক্তদানে সমর্থবান নারী-পুরুষদের। কেননা সাধারনত এই সময়টাতে শিক্ষার্থীরা বাড়ী থেকেই পড়ালেখা করে থাকে। তাই গ্রামে বা পাড়ায় কারো রক্ত প্রয়োজন হলে নিজেরাই সচেতন করতে পারবে। এসএসসি পাশের পর শিক্ষার্থীরা কলেজে পড়ার সময় ১৮ বছর হলে নিজেরাই স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ মরণোত্তর চক্ষুদান ও ভ্যাকসিন গ্রহনে আগ্রহী হবে পড়াশোনা ও পূর্বের উদ্বুদ্ধকরণ কাজ থেকে।