সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা

গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির কারণে ঝড়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

উপজেলার একটি ইউনিয়ন উড়িয়া।ইউনিয়নটির মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদী।যার একপাড়ে রয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ। অন্য পারে রয়েছে ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এদিকে রতনপুর,কালাসোনা ও কাবিলপুর এই তিন এলাকায় নেই একটিও স্কুল।ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোটো নৌকার মাধ্যমে যাতায়াত করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল,কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।শুধু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাই নয় অন্তত ১০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দৈনন্দিন কাজের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়।

আবার এই নদী পারাপারের সময় মাঝে মধ্যে নৌকাডুবির ছোট বড় ঘটনাও ঘটে।বিগত বছর গুলোতে এই নদী পারাপারের সময় নৌকা ডুবির ঘটনাও ঘটেছে অনেক বার। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তান দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে অনিহা প্রকাশ করেন। আবার কোনো কোনো অভিভাবক তাদের সন্তানদের পাঠালেও অনেক আতঙ্কে থাকেন কখন কি হয়।

এদিকে নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলের সকল শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ ও শিক্ষর্থীদের পড়াশোনা যেনো ঝরে না পড়ে সে কথা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে এই চরাঞ্চলে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সকল জনগণ, অভিভাবক সহ সচেতন মহল।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়ন এর কালাসনা,রতনপুর ও নামাপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদী। যা উড়িয়া ইউনিয়ন এর ৬নং ওয়ার্ড ও ৯নং ওয়ার্ডকে বিভক্ত করে রেখেছে দুই ভূখণ্ডে।

নদী ঘাটে ৬০-৭০জন মানুষ,৬টি মোটরসাইকেল ৩টি বাইসাইকেল ও নানা বয়সের নানা পেশার যাত্রীদের মালামাল সহ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পারাপারে লিপ্ত ছোট্ট একটা নৌকা। তখনো পার হবার অপেক্ষায় ঘাটে দাড়িয়ে অর্ধশত মানুষ।নদীতে স্রোত বেশি থাকায় মাঝিও হিমশিম খাচ্ছেন হাল ধরতে।এদিকে স্কুলে পাঠানোর জন্য নৌকায় একমাত্র ছেলে বিপ্লব কে তুলে দিয়ে ঘাটপারে তাকিয়ে আছে তার বাবা সালাম। শুধু সালামেই না তার মত অনেক অভিভাবক এভাবে সন্তান কে পাঠিয়ে অনিশ্চয়তায় তাকিয়ে থাকে কখন কি হয়।

এ বিষয়ে অভিভাবক সালাম বলেন,সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে আমি সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকি কখন কোন খারাপ সংবাদ আসে।বর্ষাকালে আমাদের ভয়টা আরো বেশী থাকে।কারণ পানি বারার সাথে স্রোতের গতিবেগ বেশী থাকে। ফলে নৌকাডুবি বেশী হয়।

পূর্বপারের কৃষক বদিউজ্জামান সহ আরো দুজন বলেন,আমাদের এলাকায় একটি মাধ্যমিক স্কুল না থাকায় আমাদের মত অনেকেরই প্রাথমিক শিক্ষা পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হয়েছে।পরে আর এগুতে পারিনি। তারা দুঃখের সাথে আরো জানায়,বর্তমানে আমাদের বাচ্চাদের সাথেও এমনি ঘটনাই ঘটতিছে।কারণ আমাদের এলাকার স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য একটা মাধ্যমিক স্কুল নাই।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ বলেন,এ বিষয়টি আমি আগে থেকেই জানি।
সত্যিই ঐ এলাকার শিক্ষার্থীরা সহ স্থানীয় জনগণ’র চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।দুঃখ জনক হলেও সত্য ঐ এলাকার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা ঝড়ে পড়ছে।আমি অবশ্যই আমার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা

Update Time : ০২:১২:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩

গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির কারণে ঝড়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

উপজেলার একটি ইউনিয়ন উড়িয়া।ইউনিয়নটির মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদী।যার একপাড়ে রয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ। অন্য পারে রয়েছে ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এদিকে রতনপুর,কালাসোনা ও কাবিলপুর এই তিন এলাকায় নেই একটিও স্কুল।ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোটো নৌকার মাধ্যমে যাতায়াত করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল,কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।শুধু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাই নয় অন্তত ১০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দৈনন্দিন কাজের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়।

আবার এই নদী পারাপারের সময় মাঝে মধ্যে নৌকাডুবির ছোট বড় ঘটনাও ঘটে।বিগত বছর গুলোতে এই নদী পারাপারের সময় নৌকা ডুবির ঘটনাও ঘটেছে অনেক বার। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তান দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে অনিহা প্রকাশ করেন। আবার কোনো কোনো অভিভাবক তাদের সন্তানদের পাঠালেও অনেক আতঙ্কে থাকেন কখন কি হয়।

এদিকে নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলের সকল শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ ও শিক্ষর্থীদের পড়াশোনা যেনো ঝরে না পড়ে সে কথা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে এই চরাঞ্চলে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সকল জনগণ, অভিভাবক সহ সচেতন মহল।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়ন এর কালাসনা,রতনপুর ও নামাপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদী। যা উড়িয়া ইউনিয়ন এর ৬নং ওয়ার্ড ও ৯নং ওয়ার্ডকে বিভক্ত করে রেখেছে দুই ভূখণ্ডে।

নদী ঘাটে ৬০-৭০জন মানুষ,৬টি মোটরসাইকেল ৩টি বাইসাইকেল ও নানা বয়সের নানা পেশার যাত্রীদের মালামাল সহ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পারাপারে লিপ্ত ছোট্ট একটা নৌকা। তখনো পার হবার অপেক্ষায় ঘাটে দাড়িয়ে অর্ধশত মানুষ।নদীতে স্রোত বেশি থাকায় মাঝিও হিমশিম খাচ্ছেন হাল ধরতে।এদিকে স্কুলে পাঠানোর জন্য নৌকায় একমাত্র ছেলে বিপ্লব কে তুলে দিয়ে ঘাটপারে তাকিয়ে আছে তার বাবা সালাম। শুধু সালামেই না তার মত অনেক অভিভাবক এভাবে সন্তান কে পাঠিয়ে অনিশ্চয়তায় তাকিয়ে থাকে কখন কি হয়।

এ বিষয়ে অভিভাবক সালাম বলেন,সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে আমি সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকি কখন কোন খারাপ সংবাদ আসে।বর্ষাকালে আমাদের ভয়টা আরো বেশী থাকে।কারণ পানি বারার সাথে স্রোতের গতিবেগ বেশী থাকে। ফলে নৌকাডুবি বেশী হয়।

পূর্বপারের কৃষক বদিউজ্জামান সহ আরো দুজন বলেন,আমাদের এলাকায় একটি মাধ্যমিক স্কুল না থাকায় আমাদের মত অনেকেরই প্রাথমিক শিক্ষা পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হয়েছে।পরে আর এগুতে পারিনি। তারা দুঃখের সাথে আরো জানায়,বর্তমানে আমাদের বাচ্চাদের সাথেও এমনি ঘটনাই ঘটতিছে।কারণ আমাদের এলাকার স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য একটা মাধ্যমিক স্কুল নাই।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ বলেন,এ বিষয়টি আমি আগে থেকেই জানি।
সত্যিই ঐ এলাকার শিক্ষার্থীরা সহ স্থানীয় জনগণ’র চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।দুঃখ জনক হলেও সত্য ঐ এলাকার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা ঝড়ে পড়ছে।আমি অবশ্যই আমার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।