1. info@dainikbd24.com : দৈনিক বাংলাদেশ : দৈনিক বাংলাদেশ
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ১০ম মহাসমাবেশ উদযাপন কমিটি গঠন স্কুলের পুনর্মিলনীতে বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছাস জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রশিদ সরকারের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল। সুন্দরগঞ্জে গরীব ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ গাইবান্ধা জেলা সমিতি, রংপুর এর আলোচনা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত পলাশবাড়ীতে সুলভ মুল্যে ডিম ও দুধ বিক্রির উদ্বোধন করেন এ্যাড.উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি নোবিপ্রবিতে ৩য় বারের মতো ‘গবেষণায় হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠিত গাইবান্ধায় ১২০ টাকায় পুলিশে নিয়োগ পেলেন ৫০ জন তরুণ ও ৯জন তরুণী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত দরিদ্র মঞ্জুরানী সবার সাহায্য নিয়ে বাঁচাতে চায়। সাদুল্লাপুরে দুর্ণীতির অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের পদশূন্য ঘোষণা

সেতুর অভাবে চরম দূর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের শিক্ষার্থীসহ লক্ষাধিক মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার,গোপালগঞ্জঃ
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ছোট একটি নৌকায় করে ১৫-২০ জন প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খরস্রোতা ওয়াপদার কাটাখালের পশ্চিম পাড় থেকে পূর্ব পাড়ে যাচ্ছে। নৌকার মাঝি শৈলেন গাইন (৫৫) স্রোতের কারনে ঠিকভাবে নৌকার বৈঠা চালাতে পারছেন না। খালে পশ্চিম পাড় দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের পারাপার দেখেছেন ফ্রান্সিস বৌদ্ধ (৫৭)। কিছু সময় পর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বসে পড়লেন নদীর পাড়ে।

এসময় তিনি বলেন, প্রতিদিন একবারের জন্য হলেও ওই খালের পাড়ে এসে শিক্ষার্থীদের পারাপার দেখতে আছেন। ২০ বছর আগে এই খালেই তার মেয়ে নৌকা ডুবিতে মারা যান। এরপর থেকে এসব শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজের সন্তানকে খুঁজে বেড়ান।

সরেজিমনে গিয়ে জানাগেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ‍উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের মুশুরিয়া গ্রামকে দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে পয়সাটহাট-মোস্তাপুরের ওয়াপদার কাটাখাল। এ খাল পাড়ি দিয়ে মুশুরিয়া, চলবল, উত্তর চলবল, শৈলদাহ, নবগ্রাম, উত্তর রামশীল, ভাটেরবাড়ি, কাফুলাবাড়ি, জহরকান্দি ও ভূতেরবাড়িসহ অন্তঃত ১০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়েত করেন। খালের পূর্ব পাশে শৈলদাহ মুশুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এজি মিশন স্কুল, এসডিএ চার্চ স্কুল এবং পশ্চিম পাশে বিতান শিশু নিকেতন, মধ্য ও দক্ষিন বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্প নামের মোট ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া পূর্ব পাশের বাসিন্দারে পশ্চিম পাশে ২’শ একর এবং পশ্চিম পাশের বাসিন্দাদের পূর্ব পাশে ৩’শ একর জমি রয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে খালটি পারাপার হয়ে থাকেন। এছাড়া প্রতিদিন এ খাল পাড়ি দিয়ে রোগী আনা-নেয়াসহ কৃষি জমি, মাছের ঘের, হাট-বাজার ও ধর্মীয় উপসানালয়সহ নানা কাজে য়েতে হয় তাদের। খেয়ায় উঠতে না পারলে অপেক্ষা করতে হয় ২০ থেকে ৩০ মিনিট।

এ খালের পীড়ারবাড়ী ও রামশীল এলাকায় সেতু থাকলেও মাঝখানের আট কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো সেতু। স্বাস্থ্য সেবা নিতে প্রতিদিন ২’শ লোক এ খাল পার হয়ে আসেন। পশ্চিম পাশ থেকে সপ্তাহে দু’দিন হাট-বাজারের জন্য পূর্ব পাশে যেতে হয় ওই সব গ্রামের বসিন্দাদের। ইতিপূর্বে এ খালে নৌকা ডুবির ঘটনায় দ্বিতীয় শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী মারা যায়। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়েও নানা দুঃচিন্তায় থাকতে হয় অভিভাবকদের। এমনকি ভরা বর্ষায় খড়স্রোতা এ খাল পাড়ি দিয়ে কৃষিপণ্য আনা নেয়ায় দূর্ভোগে পড়তে হয়ে এলাকার কৃষকদের। সেতু না থাকার ফলে প্রায় আট কিলোমিটার ঘুরে ওই সব জমির ফসল ঘরে তুলতে হয় কৃষকদের। এতে খরচ ও সময় দুইটাই ব্যয় হচ্ছে।

সন্তান হারানো ফ্রান্সিস বৌদ্ধ (৫৭) আরো বলেন, ছোট শিক্ষার্থীরা যখন বিদ্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নৌকা পারপার হয় তাদের মাঝেই যেন মেয়েকে খুঁজে পাই। আমার মত অন্য কোন বাবা যেন সন্তানেকে আর না হরায়। এমন কষ্টের বোঝা নিয়ে বেঁচে থাকতে না হয় এমনটা দাবি করেন সৃষ্টিকর্তার কাছে।

মুশুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা অনিমেষ মধু (৫০) বলেন, খাল পার হয়ে ১০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। প্রতিনিয়ত ঘটছে নৌকা ডুবির ঘটনা। আমার সন্তানকে বিদ্যালয়ে দিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। কখন যেন শুনতে হয় নৌকা ডুবির ঘটনা। খালে প্রচুর স্রোত থাকায় গত সপ্তাহে খাল পারাপার হতে গিয়ে নৌকা ডুবে দশ জন শিক্ষার্থী তাদের স্কুলব্যাগ ও বই হরিয়েছে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো ওই স্থানে একটা সেতু নির্মানের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনো সুদৃষ্টি দেননি।

রামশীল কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী পূর্ণিমা বাড়ৈ বলেন, নৌকার পার হতে অনেক ভয় লাগে, অনেক সময় নৌকা ওপাড়ে থাকলে সময় মত কলেজে যেতে পারি না।

উত্তর রামশীল গ্রামের বাসিন্দা মিলন বিশ্বাস বলেন, ওই পাশের জমি ফসল আনতে আমাদের আট কিলোমিটার ঘুরে রামশীল সেতু পার করে আসতে হয়। এতে আমাদের অনেক খরচ ও সময় ব্যয় হয়। আমারা প্রধানমন্ত্রীর আসনে মানুষ সেখানে আমরা এতো ভোগান্তিতে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি মুশুরিয়া গ্রামে একটি সেতু নির্মাণ করে যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধা করে দেওয়া হোক।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, রামশীলের মুশুরিয়ার শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকের যাতায়েতের অসুবিধার কথা জেনেছি। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষে সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিবো। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী সরেজনি পরির্দশ করেছে। আশা করি দ্রুত ভোগান্তির সমাধান হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর...

© All Rights Reserved© 2022 DainikBD24

Theme Customized BY Sky Host BD