সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পলাশবাড়ীতে সফল নারী উদ‍্যোক্তা মিতুর মিনি গার্মেন্টেসে কাজ করে ৬০০’শ নারী শ্রমিক

কর্মদক্ষতা,প্রবল আত্নশক্তি ও পরিকল্পনা থাকলে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করে ছোট মিনি গার্মেন্টস কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছেন গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার পলাশবাড়ী পৌরসভার নুনিয়াগাড়ী গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী সফল নারী উদ‍্যোক্তা মিতু বেগম। এখন তার কারখানায় কাজ করছে ৬০০শ নারী শ্রমিক।

২০০৯ সালে প্রথম একটি সেলাই মেশিন সঙ্গী করে কাটিং ও সেলাই,হাতের কাজ,এপ্লিকের কাজ,নকশিকাঁথা,নকশি বেডশীট,বেডশীট,বুটিকের ড্রেস,চাদর,পর্দা,কূশন ও টেবিল ম‍্যাট তৈরি করে স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করতেন। এভাবে যখন যেটার অর্ডার পেতেন সেই কাজ করতে থাকতেন মিতু। এভাবেই কাজ এগিয়ে যেতে থাকে মিতুর ঘরোয়া মিনি কারখানার। এর সঙ্গে দিনে দিনে বৃদ্ধি হতে থাকে নারী শ্রমিকের।

এরপর মিতু গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় বিআরডিবি পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার মাধ্যমে ৩০ দিনের এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিজের কারখানার নারীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে তাদেরও পলাশবাড়ী বিআরডিবি অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের সুযোগ করে দেন।

ব‍্যবসায়িক বুদ্ধি,রুচিবোধ,গ্রাহকের মানসিকতা ও সূজনশীল চেতনা থাকার কারণে তার তৈরীকৃত পণ্যের মান ভালো হওয়ায় জেলা- উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে ঢাকা নিউ মার্কেট ও আড়ং থেকে একের পর এক অর্ডার আসতে থাকে। তাদের কথামত অর্ডার অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে নারী শ্রমিক আরো বৃদ্ধি করতে হয়। বতর্মানে কারখানায় এবং বাড়ীতে কাজ করছেন ৬০০শ নারী শ্রমিক। মাসে কাপড়ের বিভিন্ন কাজের অর্ডার আসে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার পিচের।

 

সফল নারী উদ‍্যোক্তা মিতু বলেন, জীবনে কোনো কিছুই সহজ পথে আসে না। প্রতিটি পথেই কাঁটা বিছানো থাকে। আর তা উপরে ফেলার সাহস যাদের আছে কেবল তারাই জয়ী হবেন। উদ‍্যোগ মানেই ঝুঁকি,তাই সাহস আর ঝুঁকি না নিলে উদ‍্যোক্তা হওয়া যাবে না। আর সেই ঝুঁকি নিয়ে ৫ জন নারী আর একটি সেলাই মেশিন সঙ্গী করে আমার প্রথম যাত্রা শুরু। আজ আমি সফল নারী উদ‍্যোক্তা। দেশের বিভিন্ন ফ‍্যাশন হাউস, মার্কেট থেকে বড় বড় অর্ডার আসছে আমার কাছে। তাদের চুক্তি মোতাবেক সঠিক সময়ে মানসম্মত মাল বুঝে দিতে হয়।

নারী উদ‍্যোক্তা মিতু আরো বলেন, সংসারে একটু টানপোড়েন থাকায় এবং মায়েদের শিখানো হাতের কাজ সম্বল করে শাড়ীতে পুঁথি বসানো, জরির কাজ, নকশিকাঁথা,পাঞ্জাবি, বেডশীট, ম‍্যাক্সি,স্কার্ট, স্কার্ফ, বিয়ের পোশাক,লেহেঙ্গা,বোরকা,পহেলা বৈশাখ ও পহেলা ফাগুনের পোশাক,বালিশের কভার, ডাইনিং সেটসহ ঘর সাজানোর আইটেম তৈরি করতাম প্রথমে।

তিনি বলেন,আমি সাধ‍্যের মধ্যে যতটুকু পারছি অন‍্যদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি,এটা আমি করেই যাবো। প্রতিভা সবার মাঝেই আছে, শুধু প্রয়োজন একটু সুযোগ,তাহলেই সেই প্রতিভা বিকশিত হবে। এখন আর আমাকে বেশি একটা হয়রানি বা টেনশন করতে হয় না। আড়ং থেকে কাপড়,সুতা,গ্লাস,জরি সকল সরবরাহ করে। আজ ১ হাজার পিচ জামা পাঠিয়েছে তারা। এসব তৈরি করার সময় দিয়েছে তিনদিন।একটি জামায় সাধারণভাবে গ্লাস লাগানোর রেট দিয়েছে ২৯০ টাকা। থ্রি-পিচ ৪শ থেকে ৫শ টাকা,বেডশিট ১ টি ৫শ থেকে ৭ শ টাকা, শাড়ীর কাজ ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
আমি আমার কন্ট্রাকের নারী শ্রমিকদের এভাবেই হিসাব করে টাকা দেই। আমার কারখানায় অনেকেই আছেন বেতনভুক্ত, আবার কেহ আছেন কন্ট্রাকের কমিশন ভিত্তিতে।
সরেজমিনে মিতুর কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়,নারী শ্রমিকেরা গোল হয়ে এবং সারিবদ্ধভাবে সুই-সুতো,জরি, জামার উপর গ্লাসের কাজ করছেন। এছাড়াও বেড শিট,কৃশন,শাড়ী,ওড়না,টিশার্ট,পাঞ্জাবি,নকশিকাঁথা,সেলোয়ার-কামিজের উপর বিভিন্ন নকশা দিয়ে কাজ করছেন। কোন কোন নারী কাপড় বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে কাজ করে জমা দিয়ে পারিশ্রমিক নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে ভ্রাম‍্যমানভাবে আরো শদুয়েক নারী কাজ করে থাকেন।

তারা সংসারের কাজ সেরে দুটি টাকা অতিরিক্ত আয়ের আশায় নিথর বসে না থেকে মিতুর কারখানার কাপড় নিয়ে গিয়ে বাড়ীতে কাজ করে জমা দিয়ে যাচ্ছেন। আবার কাপড় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে অনেকেই এখন স্বামীর বোঝা না হয়ে নিজের হাত খরচ মিটিয়ে স্বামীর হাতে মাসের শেষে কিংবা সপ্তাহে কিছু টাকা ধরিয়ে দিতে পারছেন। এতে করে সংসারেও সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। স্বামীদের ভালোবাসা পাচ্ছেন অনেক নারী।

কারখানা চালাতে মিতুকে সহযোগিতা করছেন তার চাচাতো বোন মুক্তা। তিনি বলেন, আমি মিতু আপুর কারখানার যেসব নারী শ্রমিক বাড়ীতে কাপড় নিয়ে গিয়ে কাজ করে তাদের নাম রেজিস্ট্রার বইয়ে লিপিবদ্ধ করি এবং কাপড়ের পরিমাণ লিখি। পাশাপাশি রিজেক্ট কাপড় বাছাই করি। অনেক নারী শ্রমিক আছেন যারা একটু ভুল করেছেন। আমি সেই ভুলগুলো ধরে তাদের নিকট কাজ করে নেই।

কারখানায় কথা হয় নারী শ্রমিক তাজমিনা আকতার, স্বামী নাছির খান এর সঙ্গে। তিনি জানান, আমার সংসারে খুবই অভাব ছিল। কোন কূল-কিনারা করতে পারছিলাম না। কাজও তেমন একটা জানা ছিল না। ২০১৬ সালে আমার এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে পরিচয় হয় মিতু আপার সাথে। তিনি আমাকে পলাশবাড়ী বিআরডিবি অফিসের এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ নেওয়ায়। এরপর কারখানায় যোগদান করায়। সেই থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইনশাআল্লা সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখাতে পারছি।
কারখানার আর এক নারী রুমি বেগম বলেন, আমার সংসারে কিছু ঘাটতি ছিল। মিতু আপা আমাকে বিআরডিবি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দিয়ে তার কারখানায় কাজ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আমি তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্বামীর হাতে দুটো টাকা তুলে দিতে পারছি। এটাই কম কিসের।

উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন,গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের ভিশন পণ্য ভিত্তিক পল্লী গঠনের লক্ষ্যে এমব্রয়ডারি ট্রেডে একমাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ দিয়ে মিতুকে সাবলম্বি করে তোলা হয়। তাকে একজন সফল উদ‍্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরা তার সাফল্য কামনা করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ইলেকট্রিক-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস

পলাশবাড়ীতে সফল নারী উদ‍্যোক্তা মিতুর মিনি গার্মেন্টেসে কাজ করে ৬০০’শ নারী শ্রমিক

Update Time : ১১:০৮:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

কর্মদক্ষতা,প্রবল আত্নশক্তি ও পরিকল্পনা থাকলে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করে ছোট মিনি গার্মেন্টস কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছেন গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার পলাশবাড়ী পৌরসভার নুনিয়াগাড়ী গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী সফল নারী উদ‍্যোক্তা মিতু বেগম। এখন তার কারখানায় কাজ করছে ৬০০শ নারী শ্রমিক।

২০০৯ সালে প্রথম একটি সেলাই মেশিন সঙ্গী করে কাটিং ও সেলাই,হাতের কাজ,এপ্লিকের কাজ,নকশিকাঁথা,নকশি বেডশীট,বেডশীট,বুটিকের ড্রেস,চাদর,পর্দা,কূশন ও টেবিল ম‍্যাট তৈরি করে স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করতেন। এভাবে যখন যেটার অর্ডার পেতেন সেই কাজ করতে থাকতেন মিতু। এভাবেই কাজ এগিয়ে যেতে থাকে মিতুর ঘরোয়া মিনি কারখানার। এর সঙ্গে দিনে দিনে বৃদ্ধি হতে থাকে নারী শ্রমিকের।

এরপর মিতু গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় বিআরডিবি পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার মাধ্যমে ৩০ দিনের এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিজের কারখানার নারীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে তাদেরও পলাশবাড়ী বিআরডিবি অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের সুযোগ করে দেন।

ব‍্যবসায়িক বুদ্ধি,রুচিবোধ,গ্রাহকের মানসিকতা ও সূজনশীল চেতনা থাকার কারণে তার তৈরীকৃত পণ্যের মান ভালো হওয়ায় জেলা- উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে ঢাকা নিউ মার্কেট ও আড়ং থেকে একের পর এক অর্ডার আসতে থাকে। তাদের কথামত অর্ডার অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে নারী শ্রমিক আরো বৃদ্ধি করতে হয়। বতর্মানে কারখানায় এবং বাড়ীতে কাজ করছেন ৬০০শ নারী শ্রমিক। মাসে কাপড়ের বিভিন্ন কাজের অর্ডার আসে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার পিচের।

 

সফল নারী উদ‍্যোক্তা মিতু বলেন, জীবনে কোনো কিছুই সহজ পথে আসে না। প্রতিটি পথেই কাঁটা বিছানো থাকে। আর তা উপরে ফেলার সাহস যাদের আছে কেবল তারাই জয়ী হবেন। উদ‍্যোগ মানেই ঝুঁকি,তাই সাহস আর ঝুঁকি না নিলে উদ‍্যোক্তা হওয়া যাবে না। আর সেই ঝুঁকি নিয়ে ৫ জন নারী আর একটি সেলাই মেশিন সঙ্গী করে আমার প্রথম যাত্রা শুরু। আজ আমি সফল নারী উদ‍্যোক্তা। দেশের বিভিন্ন ফ‍্যাশন হাউস, মার্কেট থেকে বড় বড় অর্ডার আসছে আমার কাছে। তাদের চুক্তি মোতাবেক সঠিক সময়ে মানসম্মত মাল বুঝে দিতে হয়।

নারী উদ‍্যোক্তা মিতু আরো বলেন, সংসারে একটু টানপোড়েন থাকায় এবং মায়েদের শিখানো হাতের কাজ সম্বল করে শাড়ীতে পুঁথি বসানো, জরির কাজ, নকশিকাঁথা,পাঞ্জাবি, বেডশীট, ম‍্যাক্সি,স্কার্ট, স্কার্ফ, বিয়ের পোশাক,লেহেঙ্গা,বোরকা,পহেলা বৈশাখ ও পহেলা ফাগুনের পোশাক,বালিশের কভার, ডাইনিং সেটসহ ঘর সাজানোর আইটেম তৈরি করতাম প্রথমে।

তিনি বলেন,আমি সাধ‍্যের মধ্যে যতটুকু পারছি অন‍্যদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি,এটা আমি করেই যাবো। প্রতিভা সবার মাঝেই আছে, শুধু প্রয়োজন একটু সুযোগ,তাহলেই সেই প্রতিভা বিকশিত হবে। এখন আর আমাকে বেশি একটা হয়রানি বা টেনশন করতে হয় না। আড়ং থেকে কাপড়,সুতা,গ্লাস,জরি সকল সরবরাহ করে। আজ ১ হাজার পিচ জামা পাঠিয়েছে তারা। এসব তৈরি করার সময় দিয়েছে তিনদিন।একটি জামায় সাধারণভাবে গ্লাস লাগানোর রেট দিয়েছে ২৯০ টাকা। থ্রি-পিচ ৪শ থেকে ৫শ টাকা,বেডশিট ১ টি ৫শ থেকে ৭ শ টাকা, শাড়ীর কাজ ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
আমি আমার কন্ট্রাকের নারী শ্রমিকদের এভাবেই হিসাব করে টাকা দেই। আমার কারখানায় অনেকেই আছেন বেতনভুক্ত, আবার কেহ আছেন কন্ট্রাকের কমিশন ভিত্তিতে।
সরেজমিনে মিতুর কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়,নারী শ্রমিকেরা গোল হয়ে এবং সারিবদ্ধভাবে সুই-সুতো,জরি, জামার উপর গ্লাসের কাজ করছেন। এছাড়াও বেড শিট,কৃশন,শাড়ী,ওড়না,টিশার্ট,পাঞ্জাবি,নকশিকাঁথা,সেলোয়ার-কামিজের উপর বিভিন্ন নকশা দিয়ে কাজ করছেন। কোন কোন নারী কাপড় বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে কাজ করে জমা দিয়ে পারিশ্রমিক নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে ভ্রাম‍্যমানভাবে আরো শদুয়েক নারী কাজ করে থাকেন।

তারা সংসারের কাজ সেরে দুটি টাকা অতিরিক্ত আয়ের আশায় নিথর বসে না থেকে মিতুর কারখানার কাপড় নিয়ে গিয়ে বাড়ীতে কাজ করে জমা দিয়ে যাচ্ছেন। আবার কাপড় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে অনেকেই এখন স্বামীর বোঝা না হয়ে নিজের হাত খরচ মিটিয়ে স্বামীর হাতে মাসের শেষে কিংবা সপ্তাহে কিছু টাকা ধরিয়ে দিতে পারছেন। এতে করে সংসারেও সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। স্বামীদের ভালোবাসা পাচ্ছেন অনেক নারী।

কারখানা চালাতে মিতুকে সহযোগিতা করছেন তার চাচাতো বোন মুক্তা। তিনি বলেন, আমি মিতু আপুর কারখানার যেসব নারী শ্রমিক বাড়ীতে কাপড় নিয়ে গিয়ে কাজ করে তাদের নাম রেজিস্ট্রার বইয়ে লিপিবদ্ধ করি এবং কাপড়ের পরিমাণ লিখি। পাশাপাশি রিজেক্ট কাপড় বাছাই করি। অনেক নারী শ্রমিক আছেন যারা একটু ভুল করেছেন। আমি সেই ভুলগুলো ধরে তাদের নিকট কাজ করে নেই।

কারখানায় কথা হয় নারী শ্রমিক তাজমিনা আকতার, স্বামী নাছির খান এর সঙ্গে। তিনি জানান, আমার সংসারে খুবই অভাব ছিল। কোন কূল-কিনারা করতে পারছিলাম না। কাজও তেমন একটা জানা ছিল না। ২০১৬ সালে আমার এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে পরিচয় হয় মিতু আপার সাথে। তিনি আমাকে পলাশবাড়ী বিআরডিবি অফিসের এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ নেওয়ায়। এরপর কারখানায় যোগদান করায়। সেই থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইনশাআল্লা সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখাতে পারছি।
কারখানার আর এক নারী রুমি বেগম বলেন, আমার সংসারে কিছু ঘাটতি ছিল। মিতু আপা আমাকে বিআরডিবি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দিয়ে তার কারখানায় কাজ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আমি তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্বামীর হাতে দুটো টাকা তুলে দিতে পারছি। এটাই কম কিসের।

উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন,গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের ভিশন পণ্য ভিত্তিক পল্লী গঠনের লক্ষ্যে এমব্রয়ডারি ট্রেডে একমাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ দিয়ে মিতুকে সাবলম্বি করে তোলা হয়। তাকে একজন সফল উদ‍্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরা তার সাফল্য কামনা করছি।