বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
Dainik Bangladesh - dainikbd24@gmail.com - facebook.com/Bangladesh24Official

ডিপুটি স্পিকার আলহাজ্ব এ্যাড.ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি’র মরদেহ দেশে ফিরবে আগামী সোমবার

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০২২

নিউজ ডেক্সঃ

 

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকারের কার্যালয়ের স্মারক নম্বর-১১.০০,০০০০.০২০.০২.০৯৯.(58).২২-১৭২ পত্রে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, আগামী ২৫ জুলাই সোমবার ৮ টা ৪০ মিনিটে দেশে ফিরবেন।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদ্য প্রয়াত মাননীয় ডেপুটি স্পীকার মহোদয়ের জানাযা ও দাফন সংক্রান্ত সময়সূচি নিম্নরুপ তুলে ধরা হলোঃ

আগামী ২৫ জুলাই সোমবার সকাল ০৮ টা ৪০ মিনিটের সময় সদ্য প্রয়াত মাননীয় ডেপুটি স্পীকার আলহাজ্ব এ্যাড.মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া, এমপি মহোদয়ের মরদেহ EK-582 বিমানযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ।

সকাল ০৯ টা ১৫ মিনিটে মহোদয়ের মরদেহ নিয়ে সড়ক পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণ, জাতীয় ঈদগাহ মাঠ, ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা।

সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রাঙ্গণে উপস্থিতি, জানাযা ও সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন।

দুপুর ১২:০০ মহোদয়ের মরদেহ নিয়ে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ হতে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা।

দুপুর ০১:০০ তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে উপস্থিতি ও সশস্ত্র বাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে মহোদয়ের মরদেহ নিয়ে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলা সদর বোনারপাড়া কাজী আজাহার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন ।

দুপুর ০১ টা ৪০ মিনিটে সাঘাটা উপজেলা সদর বোনারপাড়া কাজী আজাহার আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হেলিকপ্টারযোগে অবতরণ করবেন।

দুপুর ০২:১০ ভারতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের উদ্দেশ্যে যাত্রা। এরপর ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিতি হয়ে বিকাল ০৩ টা ১০ ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সদ্য প্রয়াত মাননীয় ডেপুটি স্পীকার মহোদয়ের জানাযা ও সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন।

বিকাল ০৫ টা ৩০ মিনিটে সাঘাটা উপজেলাধীন গটিয়া নিজ গ্রামে জানাযা । সন্ধ্যা ০৬:১৫ গটিয়া নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন।

ব্যবস্থাপনায়ঃ

বিভাগীয় কমিশনার/পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা/ জেলা প্রশাসক /পুলিশ সুপার, ঢাকা/ অফিসার ইনচার্জ, রমনা থানা/বিমানবন্দর থানা/তেজগাঁও থানা, ঢাকা এবং পরিচালক, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পুরাতন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, তেজগাঁও, ঢাকা। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক / পুলিশ সুপার, গাইবান্ধা/উপজেলা নির্বাহী অফিসার/অফিসার ইনচার্জ, ফুলছড়ি / সাঘাটা এবং সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগ, গাইবান্ধা ও সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, সাঘাটা / ফুলছড়ি, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন।

২৩ জুলাই শনিবার মোঃ আব্দুল মালেক
উপসচিব, মাননীয় ডেপুটি স্পীকারের একান্ত সচিব
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। এর স্বাক্ষরিত পত্রে উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

উল্লেখ্য, ডেপুটি স্পিকার অ্যাড. ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি’ বর্নাঢ্য জীবনঃ

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এ্যাড. ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফয়জার রহমান এবং মাতার নাম হামিদুন নেছা। ১৯৬১ সালে তিনি গাইবান্ধা কলেজে ভর্তি হন। তিনি বিএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। এ্যাড.ফজলে রাব্বী মিয়া আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। আইনজীবী থাকার সময় তিনি রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সনদ লাভ করেন। এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সদস্য হন।

এর আগে ১৯৫৮ সালে রাজনীতিতে আসেন ফজলে রাব্বী মিয়া। তখন তিনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়তেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান পাকিস্তানে মার্শাল ল’ চালু করেছিলেন। সে সময় ফজলে রাব্বীর চাচা উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। চাচার মাধ্যমে তিনি মার্শাল ল’ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পরেন। এভাবেই তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২-৬৩ সালে শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বৈশ্বিক জনমত গড়ে তুলতে তিনি কাজ করেন। এ্যাড.ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদিয়ে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। দশম সংসদ থেকে তিনি আমৃত্যু ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালের জুনে এ্যাড.ফজলে রাব্বী মিয়ার পেটে টিউমার অপারেশন হয়। তবে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আগস্টে তাকে ভারত নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০২২ সালের ২২ জুলাই (বাংলাদেশ সময় ২৩ জুলাই), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ঐ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফজলে রাব্বী মিয়া মৃত্যুবরণ করেন।

এ্যাড.ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি র স্ত্রীর নাম আনোয়ারা রাব্বী (বি. ১৯৭০), যিনি ২০২০ সালের ২৬ মে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফজলে রাব্বী মিয়া তিন মেয়ের জনক ছিলেন। তারা হলেন ফাহিমা রাব্বি রিটা, ফারহানা রাব্বি, ফারজানা রাব্বি বুবলি।