শেরপুর, জেলা, প্রতিনিধিঃ
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় নড়বড়ে জোড়াতালির বাঁশের খুটি দিয়ে চলছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে ফলে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর ঝিনাইগাতী উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়ে কাজ শুরু করেন।
এসময় বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে জোড়াতালির বাঁশের খুটি দিয়েও শতশত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে,এ উপজেলায় পিডিপির প্রায় ১৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রহক রয়েছে।এ ছাড়া কৃষি কাজে ব্যবহৃত সেচ পাম্পের সংযোগ রয়েছে প্রায় ৬শ। এসব সংযোগের সিংহভাগ দেয়া হয়েছে জোড়াতালির বাঁশের খুটি কিংবা গাছের উপর দিয়ে।
এতে সামান্য ঝড় বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। এসময় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আবার মাঝে মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। কোন কোন সময় বিদ্যুতের ছেড়া তাড়ে জড়িয়ে মারাও পরছেন মানুষ। এমন অভিযোগ ও রয়েছে অহরহ।
এদিকে এসব দুর্ঘটনা এরাতে ২০২১ সালে নড়বড়ে বাঁশের খুটি ও পুরনো সিমেন্টের খুটিগুলো সম্প্রসারন করে নতুন সিমেন্টের খুঁটি স্থাপনের কাজ হাতে নেয় সরকার । এ উদ্দেশ্যে ঠিকাদারও নিয়োগ দেয়া হয়। প্রজেক্টের মাধমে নিয়োগ প্রাপ্ত ঠিকাদার ২০২১ সালে কাজও শুরু করেন।
কিন্ত কাজ চলছে ধীরগতিতে।অভিযোগ রয়েছে কাজের কোন অগ্রগতি নেই।খুড়িয় খুড়িয়ে চলছে খুটি সম্প্রসারনের কাজ।এতে জনদুর্ভোগ চরমে উঠে এসেছে। প্রজেক্টের ময়মনসিংহ বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী এসব খুটি সম্প্রসারনের কাজের দেখভাল ও দিক নির্দেশনায় ঠিকাদারের লোকজন কাজ করে থাকেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে,প্রজেক্টের কাজ হওয়ায় ঠিকাদারের লোকজন তাদের ইচ্ছা মাফিক কাজ করেন।এতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
ঝিনাইগাতী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন উপজেলার গ্রামাঞ্চলগুলোতে দুর্বল ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।একারনে মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা ।বিদ্যুতের ছেড়াতারে জরিয়ে মানুষও মারা যাচ্ছে।তিনি আরো বলেন বিদ্যুৎ খুটি সম্প্রসারনের কাজেও লক্ষ করা গেছে ধীরগতি। জনস্বার্থে খুটি সম্প্রসারনের কাজ দ্রুত করার দাবিও জানান তিনি। ঝিনাইগাতী সদর বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মোখলেছুর রহমান খান বলেন দুর্বল ব্যবস্থার কারনে আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হয় দুর্ঘটনা এরাতে।ফলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না ব্যবসায়ীসহ উপজেলাবাসীদের।তিনি বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নত প্রজুক্তিতে করার পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে পুরাতন খুটি সম্প্রসারনের কাজ করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েলের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।ঠিকাদারের সাইট ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ২০২১ সালে কাজ শুরু হয়। ২০২৪ সাল পর্যন্ত কাজ শেষের মেয়াদ । ইতিমধ্যে ৫০ভাগ কাজ হয়েছে।তিনি বলেন সরঞ্জামাদি সরবরাহ না পাওয়ায় দ্রুত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঝিনাইগাতী উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী রুকুনুজ্জামান বলেন এসব প্রজেক্টের কাজ দেখভালের দায়িত্ব ময়মনসিংহ বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলীর।তার দিক নির্দেশনায় কাজ করা হচ্ছে।আমাদের উপর দ্বায়িত্ব থাকলে এলাকার গুরুত্ব অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হতো।
এবিষয়ে জানতে ময়মনসিংহ প্রজেক্ট এরিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান নবী খানের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।